আগুন নিভেছে, ফের উৎপাদনে যাচ্ছে এস আলম সুগার মিল

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিলে আগুনে পুড়েছে এক লাখ টনের মতো অপরিশোধিত চিনি। তবে গুদামে অক্ষত মজুদ চিনি দিয়ে আগামী ১০-১২ দিন চাহিদা মেটানো যাবে। এরই মধ্যে এসব চিনি বাজারে সরবরাহ করা শুরু হয়েছে।

একই সঙ্গে প্রভাব এড়াতে শনিবার (৯ মার্চ) থেকে নতুন করে চিনি পরিশোধন শুরু করবে এস আলম গ্রুপ। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এতে বলা হয়, আগুনে পুড়ে গেছে এক লাখ টনের মতো অপরিশোধিত চিনি। সৌভাগ্যবশত আশপাশেই অবস্থিত চিনির অন্য ৩-৪টি গুদাম আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ফলে আগামী ১০-১২ দিনের পরিশোধিত চিনি প্রস্তুত রয়েছে, যা ভোক্তাদের জন্য বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া শনিবার থেকে পুনরায় চিনি পরিশোধন কার্যক্রম শুরু হলে তা বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে।

এস আলম গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক আখতার হাসান বলেন, আজ বিকেল থেকেই পরিশোধিত থাকা চিনির মজুত থেকে বাজারে সরবরাহ শুরু হয়েছে। শনিবার থেকে মূল কারখানায় উৎপাদন শুরু হবে। সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে এই অগ্নিদুর্যোগের কোনো প্রভাব যেন বাজারে না পড়ে।

তিনি আরও বলেন, পুড়ে যাওয়া গুদামটিতে এক লাখ মেট্রিক টনের বেশি অপরিশোধিত চিনি ছিল। বাকি গুদামগুলোতে বর্তমানে ৬ লাখ ৪১ হাজার মেট্রিক টন চিনির কাঁচামাল রয়েছে।

এদিকে, কারখানার গলিত চিনির লাভা কর্ণফুলী নদীতে পড়ায় পানিতে মারাত্মক দূষণ ঘটেছে। এসিডের অস্তিত্ব মিলেছে পানিতে। কারখানার পোড়া বর্জ্য নদীতে না ফেলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসন।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘এস আলমের বক্তব্য অনুযায়ী, গুদামে রাখা র-সুগারের উপরের লেয়ারটা অর্থাৎ মোট মালামালের ২০ শতাংশের মতো নষ্ট হয়েছে। বাকি মালামাল ঠিক আছে। আগুন পুরোপুরি নেভার পর বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মতামতের ভিত্তিতে এটা নিশ্চিত করে বলা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আগুনের ঘটনায় আমরা তদন্ত কমিটি করেছি। কমিটি কাজ শুরু করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বলতে পারব, কী কারণে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে।’

জেলা প্রশাসক বলেন, চিনিকলের গোডাউনের পোড়া বর্জ্য নদীতে ফেলতে নিষেধ করেছি।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। চিনির দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণে এসেছে।’

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘গুদামে এক লাখ টন চিনির কাঁচামাল মজুত ছিল। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।’

‘কর্ণফুলীর পানিতে এসিড’

পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, অগ্নিনির্বাপনের পানি সরাসরি নদীতে গিয়ে পড়ছে। এর সঙ্গে র-সুগার মিক্স আছে। সেটা আবার আগুনে গলে লাভায় পরিণত হয়েছে। সেই পানিটা নদীতে পড়ার কারণে অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। অক্সিজেনের অভাবে জলজ প্রাণী ভেসে উঠছে।’

বৃহস্পতিবার সুগার মিল পরিদর্শনে এসে ফেরদৌস আনোয়ার আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি টেকনিক্যাল টিম সুগার মিল এলাকায় এসে কর্ণফুলী নদীর পানির নমুনা সংগ্রহ করেছে। আপাতত একটি উপাদানের পরীক্ষা শেষ করতে পেরেছি। পরীক্ষায় দেখতে পেয়েছি পানিতে এসিড রয়েছে। পানির যে স্ট্যান্ডার্ড মান তার চেয়ে নিচের দিকে রয়েছে। এ অবস্থায় জলজ প্রাণীদের বেঁচে থাকা কঠিন।

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক/এসএ

Scroll to Top