নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে পুলিশ বাহিনী নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এই সুযোগে সেসময় বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ডাকাতি, হামলা, সংঘর্ষ, হত্যার মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এখন এসব ঘটনার তদন্ত করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে সংস্থাটিকে।
সরকার পতনের পর টানা বেশ কিছুদিন সড়কে কোন ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করেনি। থানায়ও ছিল না কোনো পুলিশ সদস্য। সেসময় সংঘটিত অপরাধের তথ্য অনুসন্ধানের বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
বিষয়টি স্বীকার করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ক্রাইম এন্ড অপারেশন আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, ১৩ আগস্ট মধ্যরাতে দুই নম্বর গেট সড়কের মাঝখানে লোহার গ্রিলের সাথে বেঁধে শাহাদাত হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এর এক মাস ৬ দিন পর ২১ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২০ সেকেন্ডের ভিডিও ভাইরাল হলে তার নাম পরিচয় মেলে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ঘটনাটি যখন ঘটেছিল তখন সড়ক প্রায় জনশূন্য ছিল। অগাস্টের ওই সময়ে এমনিতেই সড়কে লোকজনের চলাচল ছিল কম। আর মাঝরাত হওয়ায় ওই এলাকায় লোকজন খুবই কম ছিল। ঘটনার তথ্য উপাত্ত সংগ্রহে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তবে আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে তদন্ত করছি। শুধু এই ঘটনাই নয় সব অপরাধ নিয়ে কাজ চলছে। তবে সময়ের প্রয়োজন রয়েছে।
আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, মব জাস্টিস নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় ও সমালোচনার এই ক্রান্তি সময়ে চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ড সবাইকে স্তম্ভিত করে তুলেছে। শাহাদাত হোসেনের যদি অপরাধ থেকে থাকে সেটার বিচারের জন্য দেশে প্রচলিত আইন আছে। কাউকে এভাবে বেঁধে পেটানো যায় না। হত্যা করা যায় না।
শুধু এই একটি ঘটনাই নয়, ৫ আগষ্ট পরবর্তী চট্টগ্রাম নগরীতে চুরি, ডাকাতি, হামলা, সংঘর্ষসহ নানা অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন নিস্ক্রিয় সেসময় বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়, পাড়া-মহল্লায় হামলা সংঘর্ষ প্রতিরোধে ছাত্র আন্দোলনের কর্মী বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, জনতা রাত জেগে পাহারার ব্যবস্থা করেছিলেন। এমনকি সেই সময় সংঘটিত অনেক অপরাধের মামলাও দায়ের হয়নি থানায়। আগষ্ট মাসে নগরের সবকটি থানায় আনুমানিক ২১-২৫টি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানা গেছে।
চাটগা নিউজ/উজ্জ্বল/এসএ