আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি আসতে পারে ডিসেম্বরে

সিপ্লাস ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের দুটি শর্ত পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। এর পরও ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক। আগামী ১১ ডিসেম্বর তাদের বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি অনুমোদিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। আইএমএফের বিবৃতিতেও ঐকমত্যের কথা জানানো হয়েছে।

সেটি বোর্ডে অনুমোদনের পর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত হতে পারে।

বৃহস্পতিবার আইএমএফ প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সমাপনী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এমনটা জানায়। এ ছাড়া আইএমএফ প্রতিনিধিদল মিশনের সর্বশেষ দিনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও আলাদা বৈঠক করেছে।

ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা মোকাবেলা করা, মুদ্রা সরবরাহ আরো সংকুচিত করা, তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নিরপেক্ষ রাজস্বনীতি ও মুদ্রার বিনিময় হার আরো নমনীয় করার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ।

বৈঠক প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপত্র বলেন, ‘আমাদের মোট ছয়টি শর্ত ছিল। এর মধ্যে চারটি শর্ত পরিপালন করেছি, বাকি দুটি শর্তের কিছু কিছু জায়গায় আমাদের ঘাটতি ছিল। আমরা সে বিষয়ে টিমের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেছি।’ দুটি শর্ত, নিট রিজার্ভ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৫.৩ বিলিয়ন রাখার শর্ত পরিপালন করতে পারিনি এবং রাজস্ব সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি বলে জানান তিনি।

মেজবাউল হক বলেন, ‘আইএমএফের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার পর আমরা যেসব শর্ত আদায় করতে পারিনি সেগুলো বাস্তবায়নে কাজ করে যাব।’

মুখপাত্র আরো বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পলিসি রেট একবারে পয়েন্ট ০.৭৫% বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া ট্রেজারি বিল বন্ডের রেট ১০%-এর বেশি। অনেকে বলছে নির্বাচন সামনে রেখে আমরা অর্থনৈতিক পরিবর্তন আনি না। এমনটা হলে পলিসি রেট আমরা নির্বাচনের পরে করতাম।

গত ৪ অক্টোবর ঢাকায় আসেন আইএমএফের ঋণ পর্যালোচনা মিশনের সদস্যরা। এরপর তারা বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর বৃহস্পতিবার রিভিউ মিশনের সফর শেষ হয়েছে।

৪৭০ কোটি ডলারের এই ঋণচুক্তি অনুমোদনের পর গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার হাতে পায় বাংলাদেশ। ঋণের শর্ত হিসেবে বেশ কিছু আর্থিক ও নীতি সংস্কারে মধ্য দিয়ে যেতে হয় বাংলাদেশকে। এর মধ্যে ছিল বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারমুখী করা, ব্যাংক ঋণে সুদহারের ৯ শতাংশের সীমা তুলে দেওয়া, ব্যাংকঋণের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের তথ্য প্রকাশ, রিজার্ভের হিসাব আইএমএফ স্বীকৃত পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী করে প্রকাশ, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা, পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ইত্যাদি।

Scroll to Top