অস্ট্রেলিয়াকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা

সিপ্লাস ডেস্ক: বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৩৪ রানের দাপুটে জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান দখল করলো প্রোটিয়ারা। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনার কুইন্টন ডি ককের সেঞ্চুরি উপর ভর করে ৩১১ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় দক্ষিণ আফ্রিকা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আফ্রিকান পেসারদের তোপের মুখে পড়ে মাত্র ৭০ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে অজিরা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে অজিদের ইনিংস সমাপ্তি হয় মাত্র ১৭৭ রানে। ফলে টানা দুই ম্যাচে হারতে হলো প্যাট কামিন্সের দলকে।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) লখনৌর ভারতরত্ন শ্রী অটল বিহারী বাজপায় ইকানা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ৩১২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই আফ্রিকান পেসারদের তোপের মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে আফ্রিকাকে ব্রেক থ্রু এনে দেন ইয়ানসেন। বাঁহাতি এই পেসারের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাভুমার হাতে ক্যাচ দিয়ে ৭ রানে ফেরেন মার্শ। আরেক ওপেনার ওয়ার্নার আউট হয়েছেন পরের ওভারেই।

লুঙ্গি এনগিদির বলে রুসে ভান ডার ডুসেনকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৩ রান করা ওয়ার্নার। ভালো শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি অভিজ্ঞ ব্যাটার স্টিভেন স্মিথ। রাবাদার বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়তে হয় তাকে। আউট হলেও স্মিথ সেটি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। ১৯ রান করা এই ব্যাটারকে ফেরানোর পর জশ ইংলিসকে বোল্ড করেন রাবাদা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও ৩ রানের বেশি করতে পারেনি। স্টয়নিস সাজঘরে পথে ফেরেন আউট না হয়েই। রাবাদার বলে লেগ সাইড দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। বলে ব্যাটে না হলেও গ্লাভসে লেগে সেটি চলে যায় উইকেটকিপারের কাছে। বল যখন স্টইনিসের গ্লাভসে লাগে তখন তার হাতে ব্যাট ছিল না। নিয়ম অনুযায়ী এমনটা হলে ব্যাটার নট আউট থাকেন।

যদিও আম্পায়ার স্টয়নিসকে আউট দেন। ৭০ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর মার্নাস লাবুশেন ও মিচেল স্টার্ক ৬৯ রানের জুটি গড়েন। স্টার্ক ২৭ রান করে ফিরলে ভাঙে এই জুটি। এদিকে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি ৪৬ রান করা লাবুশেনের। শেষ দিকে কামিন্সের ২২ রান কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে রাবাদা তিনটি, কেশভ মহারাজ,ইয়ানসেন ও তাবরােইজ শামসি নেন দু’টি করে উইকেট।

এর আগে, টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ও কুইন্টন ডি ককের ব্যাটে প্রথম পাওয়ারপ্লেতে দলীয় পঞ্চাশ পূরণ করে প্রোটিয়ারা। শুরুর দিকে সুইং-ইনসুইং দিয়ে সাউথ আফ্রিকার দুই ওপেনারকে পরাস্ত করলেও, ভাগ্য সহায় হয়নি অজিদের। সময় যত গড়িয়েছে নিজের স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করেন ডি কক। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন অধিনায়ক বাভুমা। অজি বোলারদের বাজে বল পেলেই বাউন্ডারি মেরেছেন তারা। ৫১ বলে ক্যারিয়ারের ৩১তম ফিফটি তুলে নেন ডি কক। ইনিংসে ৫টি চার ও দু’টি চক্কা হাঁকান বাঁহাতি এই ব্যাটার।

১০৮ রানে ভাঙে আফ্রিকার উদ্বোধনী জুটি। ৫৫ বলে ৩৫ রান করে ফেরেন বাভুমা। ম্যাক্সওয়েলের করা বলে বড় শট খেলতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ হন এই আফ্রিকান অধিনায়ক। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা রুসে ভান ডার ডুসেন ভালো শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৩০ বলে দুই চারে ২৬ রানে অ্যাডাম জাম্পার বলে সাজঘরে ফেরেন।

তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে অজি বোলারদের শাসন করতে থাকেন ডি কক। অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের বলে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে শতরানে পৌঁছান ডি কক। ৮টি চার ও ৫টি ছক্কার সাহায্যে ৯০ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগার স্পর্শ করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার ১৯তম সেঞ্চুরি। আর এবারের বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয়। এরপর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১০৬ বলে ৮ বাউন্ডারি ও ৫ ছক্কায় ১০৯ রান করেন ডি কক।

আগের ম্যাচে বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া এইডেন মার্করাম আজও ধরা দেন আগ্রাসী রূপে। ৪১ বলে তুলে নেন অষ্টম ফিফটি। কিন্তু এরপর আরও হাত খুলে খেলতে গিয়ে আউট হন তিনি। কামিন্সের স্লোয়ার ডেলিভারিতে পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডারের হাতে ধরার পড়ার আগে ৪৪ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৫৬ রান করেন ,মার্কুরাম। শেষ দিকে ডেভিড মিলার ১৭ ও মার্কো ইয়ানসেনের ২৬ রানের ক্যামিও ইনিংসে তিনশ পার করে প্রোটিয়ারা।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দু’টি করে উইকেট শিকার করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মিচেল স্টার্ক। একটি করে উইকেট শিকার করেন জশ হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্স ও অ্যাডাম জাম্পা।

Scroll to Top