অযৌক্তিক রাজনৈতিক চাপের অভিযোগ তুলে জাতিসংঘকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠি

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: আন্দোলনের নামে বিরোধী দলগুলোর সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস ও মানুষ পুড়িয়ে মারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ্য করবেন না বলে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশ বিভিন্ন মহল থেকে অযাচিত, অযৌক্তিক ও আরোপিত রাজনৈতিক চাপের মুখোমুখি হচ্ছে উল্লেখ করেন। এই প্রেক্ষাপটে দেশের রাজনৈতিক উন্নয়নে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে জাতিসংঘকে আহ্বান জানান তিনি।

গত মাসে জাতিসংঘের মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেট আর্ল কোর্টনে র‌্যাট্রের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এই আহ্বান জানান।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকে চিঠিটি মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের নির্বাহী কার্যালয়ে পাঠানো হয়। শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 
চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের একজন ক্রুসেডার এবং তিনি দেশের মানুষের ভোট, খাদ্য ও সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করতে অনেক কষ্ট করেছেন।

মোমেন বলেন, শেখ হাসিনা একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজন করতে সংকল্পবদ্ধ।

কিন্তু একই সঙ্গে বিক্ষোভের নামে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি পোড়ানো ও মানুষকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনাগুলো তিনি সহ্য করবেন না, যা বিরোধী দল নিয়মিত করে আসছে।
মোমেন আরো জানান, শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের মেয়াদে হাজারো নির্বাচন, উপনির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন, আঞ্চলিক নির্বাচন ও মেয়র নির্বাচনের আয়োজন করেছেন। খুব ছোটখাটো কিছু ঘটনা ছাড়া সবগুলো নির্বাচনই ছিল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানুষের সম্মান রক্ষায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে এসব মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে ৩০ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ বিভিন্ন মহলের কাছ থেকে অযাচিত, অযৌক্তিক ও আরোপিত রাজনৈতিক চাপের মুখোমুখি হচ্ছে।
 

চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমরা আশা করব জাতিসংঘ ও তার সদর দপ্তর, সংস্থা ও স্থানীয় কার্যালয়গুলো বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যেতে গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের একটি উদ্যমী ও সহযোগিতামূলক মনোভাবসম্পন্ন সদস্য রাষ্ট্র। আমরা প্রবলভাবে আশাবাদী, জাতিসংঘ বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রগতি ও জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহযোগিতা ও সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমরা আরো প্রত্যাশা করব জাতিসংঘের কর্মকর্তারা পক্ষপাতহীনতা, সততা ও বস্তুনিষ্ঠতার সর্বোচ্চ মানদণ্ড মেনে চলে সংস্থাটির গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখবে। যদি তাদের প্রতিবেদনগুলোতে ভুল তথ্য ও বস্তুনিষ্ঠতার অভাব থাকে এবং এগুলো যদি উপাত্তনির্ভর না হয়, তাহলে তারা তাদের গ্রহণযোগ্যতা হারাতে পারে, যা সংস্থাটির সামগ্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি এক অশনিসংকেত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন জাতিসংঘের মহাসচিব ও সহকারী মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কয়েকজন বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ ও পেশাদারকে নিয়োগ দেওয়ারও আহ্বান জানান।

Scroll to Top