অবহেলায় জরাজীর্ণ জামিয়াতুল ফালাহ্, মুসল্লিদের অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম নগরীর জামিয়াতুল ফালাহ্ জামে মসজিদ। অনেকে বিশ্ব মসজিদ নামেও চিনেন। মসজিদটির নিয়ন্ত্রণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশন। চট্টগ্রামের এই কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নামাজ আদায় করতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা দূরদুরান্ত থেকে ছুটে আসেন। বিশেষ করে জুমার দিনে মসজিদটির ৫ তলা ভবন পুরোটাই থাকে মুসল্লিতে ভরপুর। তবে এই মসজিদ নিয়ে মুসল্লিদের অভিযোগের অন্ত নেই।

তাদের অভিযোগ, মসজিদের বেশকিছু ফ্যান নষ্ট, পানি সংকট, চতুর্থ ও পঞ্চমতলার ফ্লোর, অযুখানা, টয়লেট খুবই অপরিস্কার। এমনকী বেশ কয়েকটি টয়লেটের দরজা নেই। যে কারণে প্রতিনিয়ত বিব্রত পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন মুসল্লিরা। এমন পরিস্থিতির জন্য মসজিদটির দেখভালের দায়িত্ব থাকা ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে দুষছেন মুসল্লিরা।

রবিবার (৭ এপ্রিল) সরেজমিনে মসজিদে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা মিলেছে। মসজিদের প্রথম থেকে তৃতীয়তলা পর্যন্ত পরিস্কার থাকলেও চতুর্থ এবং পঞ্চমতলায় দেখা গেছে ধুলাবালিতে ভরা। এমনকি জায়নামাজ ছাড়া সেখানে নামাজে দাঁড়ানো, সিজদাহ্ করা, বৈঠক করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। মসজিদের বিভিন্ন স্থানে ময়লার স্তুপ পড়ে থাকতেও দেখা গেছে।

মসজিদে এতেকাফ করা এক মুসল্লী চাটগাঁ নিউজকে বলেন, এখানে এতেকাফ করতে এসে অনেক ধারণা পাল্টে দিয়েছে। মসজিদের কোনো কিছুই ঠিক নেই। এটি দেখভাল করার কোনো কর্তৃপক্ষ আছে বলে মনে হয় না। অথচ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস, লাইব্রেরি বেশ পরিপাটি। এসি লাগানো। কিন্তু মসজিদের ফ্লোর, টয়লেট, অযুখানা এতই অপরিস্কার বলার মত না। ঠিকমতো ফ্যানগুলোও ঘোরে না।

আরেক মুসল্লী বলেন, অনেক টয়লেটের দরজা নেই। যে কারণে একজন মুসল্লি ঢুকলে হঠাৎ অন্য মুসল্লি ঢুকে পড়ে। তখন কি বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এ বিষয়ে জামিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ও কমপ্লেক্সের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার সাথে কথা বলেন চাটগাঁ নিউজের প্রতিবেদক। তিনি অভিযোগের বিষয়ে খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে বলেন, প্রতিদিন জামাতের পর পর পরিস্কার করা হয় ফ্লোর। তবে চতুর্থ এবং পঞ্চমতলা কেবল শুক্রবার পরিস্কার করা হয়। যেহেতু অন্যদিন এই দুই তলায় তেমন মুসল্লি হয় না।

পুরো মসজিদ ঘুরে দেখা যায়, মসজিদের অযুখানা, চতুর্থ এবং পঞ্চমতলায় প্রচুর পরিমাণে ময়লা জমে আছে। অথচ একদিন আগেও এই মসজিদে শব-ই ক্বদর এবং দুইদিন আগে জু’মার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদি নিয়মিত পরিস্কার করা হয় তাহলে কিভাবে মাত্র একদিনের ব্যবধানে এত ময়লা জমে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া অকপটেই স্বীকার করেন প্রয়োজনের তুলনায় মসজিদের খাদেম কম। তাছাড়া খাদেমদের পারিশ্রমিকও দেয়া হচ্ছে নামমাত্র।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এই কর্মকর্তার কাছে মসজিদের ভাঙা টাইলসের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, মসজিদের জন্য ১৪ কোটি টাকা বাজেটের একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তা খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। তখন সমস্যাগুলোর সমাধান হয়ে যাবে।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top