অপহরণের ৮ ঘন্টা পর মুক্তি পেলেন ব্যবসায়ী

রাউজান প্রতিনিধি : রাউজানের ব্যস্ততম বাণিজ্য এলাকা পাহাড়তলী হতে অস্ত্রের মুখে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশের তৎপরতায় অপহরণের ৮ ঘন্টা পর অপহরণকারীর কাছ থেকে মুক্তি পান মো. আব্দুর রহিম (৩৫) নামের এক ব্যবসায়ী। আজ শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায়  উপজেলার জলিল নগর বাস স্ট্যান্ডে এনে অপহরণকারীরা তাকে মুক্তি দেয়।

এর আগে তাকে আজ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের ঊনসত্তর পাড়া এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে জানা যায়। এ ঘটনায় রাউজানের ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ভুক্তভোগী মো. আব্দুর রহিম বলেন, শনিবার সকাল ১০ টার দিকে ঊনসত্তর পাড়া আবাসিক এলাকার নিজ বাসভবন হতে পাহাড়তলী চৌহমুনিস্থ নিজ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান মেসার্স আর.এস. মেটাল এন্ড ফার্নিচার গ্যালারীর উদ্দেশ্য মোটরসাইকেল যোগে রওনা হয়। পরে আবাসিকের মুখে পৌঁছালে ৩ টি মোটরসাইকেল যোগে আসা ৭ জনের একটি দল তার গতিরোধ সামনে দাঁড়ায়।

তারা আমাকে আমার একটি ছবি দেখিয়ে বলে এই লোকটাকে চিনেন কিনা। আমি এটা আমার ছবি বলার সাথে সাথে তারা আমার মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে নেয়। অস্ত্র বের করে আমার দিকে তাক করে মোটরসাইকেলের পেছনে বসিয়ে নিয়ে যায়। তারা প্রথমে আমাকে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গিরিছায়া রেস্টুরেন্টের উপরে রাবার বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমাকে বলে ‘তুই ছাত্রলীগ করিস’।

এমন কথা বলে দুটি অস্ত্র হাতে দিয়ে ছবি তুলেন। এইসময় তারা আমার কাছে থাকা মালামাল কেনার ১ লাখ ৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এরমধ্যে আমার শ্যালক ইসরাফিল দুপুর সাড়ে ১২ টার রাউজান থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।

এদিকে অপহরণকারীরা বিকাল ৪ টার দিকে আমাকে ডাবুয়ার গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে আরো দুইজন এসে যোগ দেয়। তারা বলেন ‘তোর জন্য প্রশাসন হতে ফোন এসেছে। তাই তোকে ছেড়ে দিতে হবে। তোর টাকা গুলোও ফেরত দিব’। এই কথা বলে তারা আমাকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে জলিল নগর বাস স্ট্যান্ডে এনে ছেড়ে দেয়।

আমি বাড়িতে আসার পর এস.আই মামুন, এস. আই. শিমুল, এস.আই আলমগীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আমি আগামীকাল (রবিবার) থানায় গিয়ে এই বিষয়ে মামলা দায়ের করব।

বিষয়টি জানতে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে বারংবার যোগাযোগ করেও সংযোগ পাওয়া যায় নি।

তবে ঘটনাস্থলে আসা এসআই শিমুল চন্দ্র দাশ বলেন, আমাদের তৎপরতার কারণে অপহৃত ব্যবসায়ী মুক্তি পেয়ে ফিরে এসেছে। তিনি মুক্তি পেয়ে আইনি প্রতিকার চাচ্ছে ।  আমরা নিজ উদ্যোগে ঘটনাস্থলের ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। অপরাধীদের সনাক্ত করতে চেষ্টা করছি। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

উল্লেখ্য, অপহৃত ব্যবসায়ী মো. আব্দুর রহিম কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার উত্তর হওলা ইউনিয়নের শহীদুল ইসলামের ছেলে। তবে, তিনি দীর্ঘ দুই যুগেরও অধিক সময় ধরে রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়ন ঊনসত্তর পাড়া গ্রামের আবাসিক এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন। পাহাড়তলী চৌমুহনী বাজারে মেসার্স আর.এস. মেটাল এন্ড ফার্নিচার গ্যালারী নামে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও স্টীলের আলমিরা, ওয়ারড্রবসহ নানান ফার্নিসার তৈরির কারখানা রয়েছে।

চাটগাঁ নিউজ/যুবায়ের/জেএইচ

Scroll to Top