অনিয়মের অভিযোগ, তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কালো তালিকাভুক্ত

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি : মিথ্যা নথিপত্র ও যোগ্যতা প্রমাণের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা না দেওয়ার অভিযোগে পার্বত্য চট্টগ্রামে শতকোটি টাকার উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নকারি বেশ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটি সওজ সড়ক সার্কেল অফিসের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন হায়দার। তিনি জানান, অনিয়মের কারণে চলমান ডিভার্ট ক্যাটাগরিতে নাম উল্লেখ থাকাকালীন সময়ে কালো তালিকাভুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো আর কোনোভাবেই ইজিপিতে প্রবেশ করতে পারবে না।

কালো তালিকাভুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা, হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড, মি. ইউটি মং, ইউনুছ এন্ড বাদ্রার্স।

এদিকে ইজিপি প্রকিউরমেন্ট সিস্টেম ওয়েব পোর্টালে উল্লেখ করা হয়েছে, খাগড়াছড়ির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা ও বান্দরবানের মি. ইউটি মং নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি পার্বত্য রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে ব্রিজ নির্মাণসহ সড়ক উন্নয়নের চলমান কাজগুলোর তথ্য প্রদান না করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ পাচঁটি টেন্ডার কাজ বাস্তবায়ন করছে।

এই ধরণের প্রতারণামূলক আচরণের জন্য রাঙামাটি সড়ক সার্কেল অফিসের আওতাধীন সওজ কর্তৃপক্ষ উপরোক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন একজন প্রকৌশলী জানিয়েছেন, চলমান কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট অনলাইনে সাবমিট করার পর তা যাচাই-বাছাইয়ের পর ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট টেন্ডার কাজের কার্যাদেশ প্রদান করার নিয়ম। কিন্তু ভিন্ন পদালম্বন করে কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই না করে টেন্ডার কাজ দিয়ে দেওয়ার পর সেই কাজ বাস্তবায়নাধীন সময়ে কালো তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি রহস্যজনক।

অপরদিকে, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি রাঙামাটির সভাপতি ওমর ফারুক বলেছেন, কাজ দেওয়ার আগেই কাগজপত্র যাচাইয়ের দরকার ছিল এবং সেটাই নিয়ম। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া শতকোটি টাকার কাজ বাস্তবায়ন করবে; এই ধরণের প্রতারণামূলক আচরণের দায়ভার সংশ্লিষ্ট অফিস কোনোভাবেই এড়াতে পারেনা। যেসকল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এখন কালো তালিকাভূক্ত করা হয়েছে,কার্যাদেশ দেওয়ার আগেই কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এবং এই ক্ষেত্রে আইনের চরমভাবে ব্যতয় ঘটেছে বলেও মন্তব্য করেছেন দুপ্রক সভাপতি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কালো তালিকাভুক্তির পরেও জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত ঠিকাদাররা এখনো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

এছাড়াও রাঙামাটিতে কাজ করা কুমিল্লার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যাপারে সরকারি ইপ্রকিউর ওয়েব পোর্টালে উল্লেখ করা হয়েছে, এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফলস ডকুমেন্ট সাবমিট করায় তাদেরকে কালো তালিকাভূক্ত করা হয়েছে।

সওজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একাধিকবার নোটিশ প্রদানের পরও অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় তাদেরকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

চাটগাঁ নিউজ/এআইকে/এসএ

Scroll to Top