সিপ্লাস ডেস্ক: ‘দুপুর ১২টার সময় সাগরে নেমেছি। মাত্র ছয়টি জাটকা নিয়ে সন্ধ্যার আগে ফিরে এসেছি। শুধু আমি একা না, আমার নৌকায় তিনজন জেলে। আমরা তিনজনে ১৩টি জাটকা পেয়েছি। অথচ আজ আমাদের শুধু তেল খরচই আছে দুই হাজার টাকার ওপরে। এ ১৩টি মাছ নিয়ে ফিরে তেল কিনবো, নাকি সংসার চালাবো?’
বুধবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে কথাগুলো বলছিলেন পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন ঝাউবন এলাকার জেলে আবুল কালাম।
আবুল কালাম বলেন, ‘একটু বড় মাছের আশায় কয়েকমাস ধরে সাগরে পড়ে আছি। কোনো মাছের খোঁজ নেই। দু-তিনদিন ধরে যে জাটকা মাছ পাচ্ছি তাও পরিমাণে অনেক কম।’
শুধু আবুল কালাম নয়; একই এলাকার জেলে খলিল, ইদ্রিস, আল-আমিনসহ বেশিরভাগ জেলেরই একই অবস্থা।
বিকেলে কুয়াকাটা এলাকার ঝাউবন, গঙ্গামতি, চর-চাপলি, লেম্বুরবনসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জেলেরা সমুদ্র থেকে ফিরছেন হাতেগোনা কিছু জাটকা, দু-একটি বড় কিংবা ছোট প্রজাতির অল্প কিছু মাছ নিয়ে। তবে এ মাছ ধরতে তাদের হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়েছে। খরচের অংকটাও অনেক বেশি। এতে প্রতিদিনই তারা হতাশ হচ্ছেন।
পটুয়াখালী বড় দুটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আলিপুর-মহিপুরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত সপ্তাহের প্রথম দিকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করা জেলেরা এখানে এসে মাছ বিক্রি করছেন। এসব জেলেরা বড় সাইজের অনেক মাছ পেয়েছেন। তবে ২-৪ দিনের মধ্যে আবারও মাছ সরবরাহ কমতে শুরু করেছে।
আলিপুর বন্দরের ভাই ভাই ফিশের পরিচালক মো. মিজান গণমাধ্যমকে , ‘১৬ তারিখ থেকে চারদিন এ বন্দরে অনেক মাছ পাওয়া গেছে। তবে সব জেলেরা মাছ পাননি। মাছ কম হলেও দাম ভালো থাকায় যা পাচ্ছেন তা দিয়ে পুষিয়ে নিতে হচ্ছে জেলেদের।’
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, কলাপাড়া উপজেলায় নিবন্ধন-অনিবন্ধিত প্রায় ৩০ হাজার জেলে রয়েছেন। এরমধ্যে মাত্র ৩২৮টি ট্রলার বেশি মাছ পেয়েছে। হিসাব মতে, গত এক সপ্তাহে ৪৮৪ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি হয়েছে। তবে ডুবোচরের কারণে উপকূলের জেলেরা মাছ কম পাচ্ছেন। তাদের জন্য পরামর্শ একটু গভীরে গিয়ে মাছ ধরার।