নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারের নতুন অর্থ প্রতিমন্ত্রীকে পেয়ে দীর্ঘ ১৫ বছরের অপমান, লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার কথা জানালেন আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
নেতারা বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর আমরা আওয়ামী লীগ থেকে বিতাড়িত। আনোয়ারার মানুষ অনেক স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, রাজপরিবারের রাজমনোভাব নিয়ে আনোয়ারার নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের অধিকার হরণ করে রাজনৈতিক পদ-পদবি থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। তবে আজ ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী হওয়াতে আনোয়ারার সর্বস্তরের মানুষের আনন্দের জোয়ার ভেসে যাচ্ছে।
শনিবার (৯ মার্চ) বিকালে আনোয়ারা সরকারি কলেজ মাঠে আনোয়ারা গণসংবর্ধনা কমিটির আয়োজনে দেশের প্রথম নারী অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপিকে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এভাবে দীর্ঘদিনের মনের ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
নাগরিক কমিটির সভাপতি ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আবুল কালাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনায় দীর্ঘ ১৫ বছর রাজনীতি থেকে বিতাড়িত ত্যাগী নেতাকর্মীরা শুধু তাদের বক্তব্যে ক্ষোভ ঝেরেছেন তা নয়, বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে সমাবেশ থেকে- ‘বউতদিন হাইও, আর ন-হাইও’ (বহুদিন খেয়েছো, আর খেয়েও না) শ্লোগানে সভাস্থল মুখর হয়ে ওঠে।
প্রধানমন্ত্রী প্রতিহিংসার রাজনীতি বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী প্রতিহিংসার রাজনীতি বিশ্বাস করে না। আমরাও প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। প্রতিহিংসা দিয়ে কোন সময় ভালো কিছু হয় না। খারাপ কিছু হয়। এজন্য নেতাকর্মী সকলের প্রতি সৌহার্দপূর্ণ রাজনীতি করার আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রী তাঁর প্রয়াত পিতা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান কায়সারের কথা উল্লেখ করে আরও বলেন, ‘আমি এখানে সংবর্ধনা নিতে আসি নাই। আমি আমার বাপের বাড়িতে এসেছি। আমি আনোয়ারার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চাই। আমি এখানকার মানুষের ভাগ্য বদলাতে চাই।’
সভাপতির বক্তব্যে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, যারা এতদিন কথা বলতে পারে নাই, যাদের বাড়িঘর দখল করেছে, জমি দখল হয়েছে। যারা সিন্ডিকেট করে জমি দখল করে নিয়েছে তাদেরকে উচ্ছেদ করতে হবে। নিজের রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকা স্বত্ত্বেও অনেকেই এলাকাছাড়া ও ঘরছাড়া।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, আপনি (ওয়াসিকা) যেহেতু রাজনীতির পরিবারের সন্তান, আপনি উপস্থিত সবার চেহারা দেখলে বুঝতে পারবেন কার মনে কি দুঃখ, কার অন্তরে কি জ্বালা। আনোয়ারার তৃণমূল কর্মীরা কখনো লাঞ্ছনার কথা কল্পনা করে নাই। আনোয়ারার কর্মীরা চায় না কখনো ভোট লুটপাট করতে। আওয়ামী লীগের কর্মীরা কখনো চায় না লুঠেরা হয়ে সরকারি সম্পদ আত্মসাৎ করতে। আওয়ামী লীগের কর্মীরা চায় না লুটপাট করে রাতারাতি ধনশালী হতে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বশর ও আওয়ামী লীগ নেতা নাজিম উদ্দীন সুজনের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম এমপি, দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সদস্য সাবেক স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতা ডাক্তার নাসির উদ্দিন মাহমুদ, এইচ এম নজরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক, দক্ষিণ জেলা কৃষক লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির, মুক্তিযোদ্ধা মো ইদ্রিস, সিরাজুল ইসলাম খান, এড. চন্দন বিশ্বাস, স্বপন ধর, এড. শামসুল আলম, দিদারুল ইসলাম দিদার, সাবেক ছাত্রনেতা অহিদুল ইসলাম অহিদ, আহকাম ইবনে জামিল মিশন, জিয়া উদ্দিন বাবলু, অধ্যক্ষ আবদুল্লাহ আল মামুন।
উপস্থিত ছিলেন, সাবেক চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম শহিদ,আওয়ামীলীগ নেতা আজিজুল হক আজিজ,সহ নাগরিক সংবর্ধনা সভায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগ, কৃষক লীগ মুক্তিযোদ্ধা সহ সর্বস্তরের নারী পুরুষ।
চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন/এসএ