ক্রীড়া ডেস্ক: চতুর্থ দিন শেষে ফলাফলটা অনুমেয়ই ছিল। অ্যান্টিগা টেস্টে বাংলাদেশের হার ছিল অবশ্যম্ভাবী। হলফ করেই বলা যায় চরম আশাবাদী ব্যক্তিও ভাবেননি বাংলাদেশ অ্যান্টিগা টেস্ট বাঁচিয়ে ফেলবে। শেষ পর্যন্ত সেটা হলোও না।
শেষ দিনের মাত্র আট ওভার টিকল বাংলাদেশ। ব্যাটিং ব্যর্থতা আর ক্যারিবিয়ান পেসারদের আগুনে পুড়ে ২০১ রানে অ্যান্টিগা টেস্টেও জুটল পরাজয়। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেলেন ক্রেইগ ব্রাথওয়েটরা।
প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসও ডিক্লেলার করল বাংলাদেশ। আলজারি জোসেফের করা ইনিংসের সপ্তম ওভারে কাঁধের পেছনের অংশে আঘাত পান শরীফুল। বাংলাদেশের ফিজিও মাঠে ঢুকে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। শরীফুল এরপর আর ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেননি। টিম ফিজিও এসে শরীফুলকে শুশ্রূষা করার পরই হ্যান্ডশেক করে টেস্ট ম্যাচের ইতি টানেন তাসকিন-শরীফুলরা ড্রেসিংরুম থেকে একে একে বেরিয়ে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজরা। সব মিলিয়ে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা সাত টেস্ট জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচেও জয়ী ক্যারিবিয়ানরাই।
এই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রাপ্তি একমাত্র তাসকিনের বোলিং। দ্বিতীয় ইনিংসে একাই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন উইন্ডিজকে। প্রথমবারের মতো পেয়েছেন ইনিংসে পাঁচ উইকেট। স্পেল শেষ করেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার নিয়ে। তাসকিনের ছয় উইকেট নেয়া দুর্দান্ত পারফরম্যান্সেই চতুর্থ ইনিংসে লক্ষ্যটা সাড়ে তিনশোর আশেপাশে ছিল বাংলাদেশের।
এই ম্যাচে জিততে হলে ইতিহাসই গড়তে হতো বাংলাদেশকে। টপকাতে হতো এই উইন্ডিজের বিপক্ষে ২১৭ রান করে ম্যাচ জেতার রেকর্ডকে। ইতিহাস গড়া দূর, ন্যুনতম লড়াইটাই করতে পারেননি বাংলাদেশী ব্যাটাররা। ২২৫ রান দূরে থেকে শেষ দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। ইনিংসের ব্যপ্তি ছিল মাত্র আট ওভার। এর মধ্যেই ফিরে যান হাসান মাহমুদ ও প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা জাকের আলী। শরীফুল হন রিটায়ার্ড আউট।
টেইলএন্ডাররা ম্যাচ বাঁচাবেন, এই দূরাশা কেউ করেনি। তবে দলের স্বীকৃত ব্যাটারদের আউট হওয়ার ধরন, পরিস্থিতিভেদে শট সিলেকশন আরো একবার প্রশ্ন তুলে দিল। দুই ওপেনার জাকির হাসান-মাহমুদুল হাসান জয়ের দুই ইনিংসের আউট হওয়ার স্টাইল যেন ‘কার্বন কপি’। দুই ইনিংসেই বাঁহাতি জাকির ফিরেছেন ইনসাইড এজে বোল্ড হয়, জয় বিদায় হয়েছেন আউটসাইড এজে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। শাহাদাত দীপুও ফিরেছেন দুই ইনিংসে একইভাবে।
আগের ইনিংসে ফিফটি করা মুমিনুল হক আলতো স্ট্রেইট ড্রাইভে ফিরতি ক্যাচ দেন কেমার রোচের হাতে। লিটন দাস উইকেট থিতু হয়েছেন, জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। শামার জোসেফের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে পুল শটে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন। চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক মিরাজ।
ওয়ানডে স্টাইলের ব্যাটিংয়ে বেশ স্বচ্ছন্দেই ছিলেন উইকেট পুরোটা সময়। বাউন্সারের জবাবে পুল, ফুল লেংথের বলে ড্রাইভ, আরেকটু সামনে পড়া বলগুলোতে খেলেছেন ব্যাকফুট পাঞ্চ। কিন্তু দারুণ খেলতে থাকা এই ডানহাতি জেইডেন সিলসের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে পেছনে ক্যাচ দেন এই ডানহাতি, উইকেটরক্ষক জশুয়া ডা সিলভা ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন।
মূলত চতুর্থ দিনই ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত হয়ে যায়। শেষ দিনের আট ওভারকে কেবল আনুষ্ঠানিকতা বললেও কেউ আপত্তি করবেন না বোধ হয়!
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ