চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে জুতা পেটার হুমকি দিয়েছে মাহাবুর রহমান মাহাম নামের এক যুবক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করার ঘটনায় ঐ যুবককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় জেলা ও দায়রা জজ, ২য় আদালত।
জানা যায়, মাহাম তানোরের তালন্দ কালনা পূর্ব পাড়ার মৃত ছদের আলীর ছেলে। যিনি নিজেকে পরিচয় দেন রাজশাহী-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর সমর্থক হিসেবে।
রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) মাহাবুর রহমান মাহামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছেন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ, ২য় আদালত এবং নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী ও তানোর) চেয়ারম্যান আবু সাঈদ। নোটিশে আগামী বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে স্বশরীরে হাজির হয়ে মাহামকে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, বিভিন্ন প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অত্র নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির নিকট গোচরীভূত হয়েছে যে, শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে Md. Mahabur নামক ফেসবুক আইডি থেকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শারমিন আকতার নিপা মাহিয়া এর নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা বাধাগ্রস্ত করার জন্য তার সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ও মানসম্মান হানিকর ভিডিও বক্তব্য প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালালে শারমিন আকতার নিপা মাহিয়াকে জুতা পেটা করা ও নির্বাচনি প্রচারণায় বাধা প্রদানের হুমকিসহ যেকোনো বড় ধরনের ক্ষতি করবেন বলে ভিডিওতে প্রকাশ করেন।
নোটিশে দেওয়া তথ্যমতে ঐ যুবককে বলা হয়, উক্ত আচরণের মাধ্যমে আপনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ১১(ক) লঙ্ঘন করেছেন যা নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম হিসেবে গণ্য হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি বিধি ১১(ক) লঙ্ঘণের দায়ে আপনার বিরুদ্ধে কেন উল্লিখিত বিধিমালার বিধি ১৮ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এই মর্মে নিম্নস্বাক্ষরকারীর কার্যালয়ে আগামী ২৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টায় স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
রাজশাহী-১ আসনের নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিল্লাল হোসেন বলেন, “ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে”।
ভিডিওতে মাহাম বলেন,“আপনাকে বলতে চাই। আপনি চলচ্চিত্র জগতের মানুষ। চলচ্চিত্র জগৎ থেকে এসেছেন। আপনার অতীত থেকে শুরু করে সবকিছু জানা আছে। এ টু জেড সবকিছু জানি। অনেক কিছু আপনার তথ্য জানি। চলচ্চিত্র জগতের কারা যায় সেটা আপনি ভালো করে জানেন। আপনি হয়তো ভাবছেন- কিন্তু না, আপনি ভুল জায়গায় নক দিয়েছেন। ইনি একজন শহিদ পরিবারের সন্তান। এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীকে নিয়ে নেগেটিভ-পজেটিভ মন্তব্য করার আগে নিজের প্রজিশনটা বিবেচনা করতে হবে। আপনি প্রথমে একটি বিয়ে করলেন গ্রামে। তাকে ডিভোর্স দিলেন। দ্বিতীয় বিয়ে করলেন সিলেটে। তাকে ডিভোর্স দিলেন। তৃতীয় বিয়ে করেছেন। আপনি রাজনীতিতে এসে কেনো এমপি ওমর ফারুককে নিয়ে মন্তব্য করবেন”।
ভিডিও বার্তায় ঐ যুবক আরো বলেন,“আপনি যদি তানোর-গোদাগাড়ীর মাঠে ভোট করতে চান। সুষ্ঠভাবে সুন্দরভাবে নিজের ভোট নিজে চেয়ে যান। আপনার মতো দুশ্চরিত্রা মহিলা থাকলে তানোর-গোদাগাড়ীর উন্নয়ন তো দূরের কথা; হাজারো ছেলে নষ্ট হবে। আপনার মত মাহিয়া মাহিকে একদম জুতা দিয়ে পেটানো উচিত। আপনি ওমর ফারুক চৌধুরীর বাসার কাজের মেয়ের ও যোগ্য না”।
বিষয়টি নিয়ে মাহাবুর রহমান মাহামের মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।