বিনোদন ডেস্ক : সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ পরিকল্পনার আওতায় ২০১৮ সাল থেকে বিনোদনজগৎ থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এর ছয় বছরের মাথায় বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল বক্স অফিসে পরিণত হয়েছে সৌদি!
তার প্রমাণ ২০২৪-এর প্রথমার্ধে সিনেমা থেকে সৌদির আয়ের অংক। এই ছয় মাসে সৌদির প্রেক্ষাগৃহে বিক্রি হয়েছে ৮৫ লাখের বেশি টিকিট। আর এ থেকে দেশটি আয় করেছে ৪২০ মিলিয়নের বেশি সৌদি রিয়াল। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার বেশি!
সৌদি আরবের সংস্কৃতিমন্ত্রী এবং আল-উলা রয়্যাল কমিশনের গভর্নর প্রিন্স বদর বিন আবদুল্লাহ বিন মোহাম্মদ বিন ফারহান আল-সৌদ গত মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছেন, চলতি বছরের প্রথমার্ধে সৌদি বক্স অফিস আয় করেছে ৪২১ দশমিক ৮ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল। শুধু তাই নয়, তালিকার শীর্ষ আয়কারী প্রথম তিনটি চলচ্চিত্রের দুটিই সৌদি প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে।
সৌদি আরবের জেনারেল কমিশন ফর অডিও ভিজ্যুয়াল মিডিয়ার (জিসিএএম) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে সিনেমা চালুর পর পাঁচ বছরে এই খাত থেকে সৌদি আরবের আয় হয়েছে ১৪ কোটি ২৬ লাখ ডলারের বেশি। প্রথম বছরে এই আয় ছিল ২০ লাখ ডলার। সরকারি তথ্যমতে, গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে টম ক্রুজ অভিনীত অ্যাকশন ড্রামা ফিল্ম ‘টপ গান: ম্যাভেরিক’।
১২ লাখের বেশি টিকিট বিক্রি করে সিনেমাটি আয় করেছে ৮ কোটি ৪০ লাখ রিয়ালের বেশি। এরপরই আছে ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ ও টম ক্রুজ অভিনীত ‘মিশন: ইম্পসিবল-ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান’।
সৌদি সিনেমাগুলোও পিছিয়ে নেই। নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার আগাম খবর পেয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তৈরির উদ্যোগ নিতে শুরু করেন তিন সৌদি যুবক আল ফাদান, ইব্রাহিম আল খাইরুল্লাহ ও আলী খালতামি। তিনজন মিলে প্রতিষ্ঠা করেন ‘তেলফাজ ১১’ নামের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।, তেমনি তেলফাজ হয়ে উঠেছে দেশটির অন্যতম প্রধান প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। গত বছরের শুরুতে প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে আসে তাদের প্রথম ফিচার ফিল্ম ‘সাত্তার’।
অন্যতম প্রধান প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘তেলফাজ ১১’-এর প্রথম দুটি সিনেমা ‘মানদুব’ ও ‘সাত্তার’ দারুণ ব্যবসা করে সৌদি বাজারে তুমুল সাড়া ফেলে এই সিনেমা। মুক্তির প্রথম ১২ দিনেই বক্স অফিস থেকে সিনেমাটি আয় করে ২২ লাখ মার্কিন ডলার। চলচ্চিত্রবিষয়ক মার্কিন গণমাধ্যম হলিউড রিপোর্টারের তথ্যমতে, সৌদিতে সিনেমাটি দেখতে হলে গেছে ৯ লাখ ৩০ হাজারের বেশি দর্শক। বিশ্বজুড়ে সিনেমাটি আয় করেছে ১১ মিলিয়ন ডলারের বেশি, যা সৌদি সিনেমার ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
চলতি বছরের শুরুতে প্রেক্ষাগৃহে তেলফাজ নিয়ে আসে দ্বিতীয় সিনেমা ‘মানদুব’। নির্মাতা আলী খালতামির কমেডি থ্রিলারটি বক্স অফিসে সাফল্য পেয়েছে। গত বছরের টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে এর প্রিমিয়ার হয়। সেখানেও প্রশংসিত হয় ‘মানদুব’।
বক্স অফিসের বাইরে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবেও বাজিমাত করছে সৌদি আরবের সিনেমা। এবারের কান উৎসবে ইতিহাস গড়েছে সৌদি আরব।
৭৭ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়ে উৎসবের ‘আঁ সাঁর্তে রিগা’ বিভাগে স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড জিতেছে দেশটির নির্মাতা তৌফিক আলজায়েদির সিনেমা ‘নোরাহ’। গত বছরের ডিসেম্বরে জেদ্দায় আয়োজিত রেড সি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নোরাহ’র প্রিমিয়ার হয়েছিল।
চাটগাঁ নিউজ/এআইকে