চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : নগরের ফলমণ্ডির সামনে ডাস্টবিনে থেকে নাসরিন প্রকাশ সুখির বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার মীর হোসেন ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন।
এর আগে সোমবার (১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফলমণ্ডির সামনের ডাস্টবিনে মরদেহটি পাওয়া যায়। পরে পুলিশ তার পরিচয় শনাক্ত করে।
গ্রেপ্তার মীর হোসেন মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রুমানা আক্তারের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এই দায় স্বীকার করেন। এ ঘটনার পর আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
এর আগে সোমবার (১ এপ্রিল) ভোরে নগরের বাকলিয়া থানার বউবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। মীর হোসেন কুমিল্লা থানার মুরাদনগর থানার রামচন্দ্রপুর এলাকার আলালের কান্দি গিয়াস উদ্দিন বাড়ির মৃত মো. গরীব হোসেনের ছেলে।
জবানবন্দিতে মীর হোসেন ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যার দায় স্বীকার করার বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা বলেন, মীর হোসেন ভাঙারি মালামাল বিক্রেতা। সারাদিন ভাঙারি জিনিসপত্র কুড়িয়ে বিক্রি করে। অনেক মালামাল হলে ভ্যানে করে বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করে। মীর হোসেনের প্রথম স্ত্রী ১০ বছর আগে মারা যায়। পরে আবার বিয়ে করে মীর। ১০-১২ আগে ভাঙারির মালপত্র কুড়াতে গিয়ে সুখির মা বিলকিস বেগমের সঙ্গে তার পরিচয়।
তিনি জানান, গত রোববার রাতে নগরের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের সামনে সুখি একা দাঁড়িয়ে ছিলো। তখন মীর হোসেন কাগজ, বোতল, প্লাস্টিক কুড়াতে যায় ঐ মসজিদের সামনে। তখন সুখি মীরকে দেখে সিআরবির দিকে যেতে চাই, এরআগেও সুখি মীরের সঙ্গে গিয়েছিল। রিকশায় নিয়ে কদমতলী গিয়ে দোকান থেকে সুখিকে চিপস নিয়ে দেন মীর। এরপরে দুজন ৫ থেকে ১০ মিনিট হেটে টাইগার পাসের দিকে যায়। পলোগ্রাউন্ড পার হয়ে গেলে সেখানে অন্ধকারে ঝোপ-ঝাড়ে সুখির মুখ চেপে ধর্ষণ করার চেষ্টা করলে চিৎকার দিতে গেলে নাকমুখ চেপে ধরে। এরপর ২-৩ মিনিট মুখ চেপে রাখার পরে যখন মেয়েটার নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর সে রাস্তায় চলে আসে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মীর হোসেন ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, সুখিকে হত্যার পরে পুনরায় সেখানে গিয়ে মরদেহটি একটি চটের বস্তার মধ্যে পাতা দিয়ে মরদেহ ঢেকে রাখে। ভোর ৫টার দিকে হেঁটে নগরের বাকলিয়া থানার বউবাজার বাসায় চলে যায়। বাসায় গোসল করে ঘুমানোর পর দুপুর ১২টার দিকে বউবাজার মহিউদ্দিনের গ্যারেজ থেকে একটি ভ্যান ভাড়া নেয় মীর। বাসা থেকে বের হবার সময় ২-৩ টা বস্তা নিয়ে ছিল মীর। আসার সময় চেরাগী পাহাড়ের পাশে ডাস্টবিন থেকে একটি টুকরি আর একটি ভাঙা বালতিও নেয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করে ঈদগাহ পর্যন্ত যায় মীর। সেখান থেকে সুখির মরদেহের কাছে গিয়ে মরদেহটা বস্তা ভিতর নিয়ে কদমতলী যায়। মরদেহের সঙ্গে ভাঙারি মালমালও রাখা হয়েছিল। তার উপর বালতি বস্তা দিয়ে ঢেকে রেখেছিল। তারপর সন্ধ্যা ৭ টার দিকে নগরের স্টেশন রোডে ফলমণ্ডির সামনে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে সঙ্গে থাকা বালতি আর বস্তুাগুলো গাড়িতেই ছিলো। পরে সেইগুলো নিয়ে ভ্যানগাড়িটা গ্যারেজে জমা দিয়ে বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়ে।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ