নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের রাউজানে ওমানপ্রবাসী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী সিআইপির বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বিচার চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন স্বয়ং সিআইপি ইয়াছিন। চিঠিতে তিনি দেশের প্রতি নিজের অবদান তুলে ধরেন এবং চিহ্নিত হামলাকারীর পরিচয় উম্মোচন করেন।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঘটনার পর থানায় মামলা পরবর্তী তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে চিঠির মাধ্যমে এই আবেদন জানান। চিঠির একটা কপি এসেছে ‘চাটগাঁ নিউজের’ হাতে।
আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, আমি দীর্ঘ বছর যাবত মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান এ একজন প্রবাসী বাবসায়ী হিসেবে স্ব-পরিবারে অবস্থান করে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছি। যার স্বীকৃতিস্বরূপ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অমি পরপর ১০ (দশ) বার এনআরবি সিআইপি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি।
বর্তমানে আমি প্রবাসীদের শীর্ষ সংগঠন এনআরবি সিআইপি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছি। একই সাথে, আমি চট্টগ্রাম সমিতি ওমান (প্রবাসে দুঃস্থ মানবতার সেবায় একমাত্র সংগঠন) এর সভাপতি, বাংলাদেশ ক্রিকেট ক্লাব ওমান (ওমান সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত সংগঠন) এর প্রধান উপদেষ্টা, ‘প্রবাসী সহায়তা ডেক্স’ চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত আছি।
আমি অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, আজ (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার সময় চট্টগ্রামের রাউজান থানার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হকের নেতৃত্বে ৫০ থেকে ৬০ জন সন্ত্রাসী আমার, আমরা ভাইয়েদের এবং আমার চাচার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট এবং গান-পাউডার ছিটিয়ে অগ্নিসংযোগ ঘটায়। এতে বাড়ির অনেকে হতাহত হয়েছেন এবং দুস্কৃতিকারীরা আমাদের বাড়ি থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। দুর্ঘটনায় আমার, আমার ভাইয়ের এবং আমার চাচার বাড়িটি একেবারে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হকের নামে রাউজান থানায় হত্যা, অস্ত্র, অপহরণ, ডাকাতিসহ ১২টির অধিক মামলা রয়েছে। ২০০২ সালের ১১ এপ্রিল রাউজানের হিংগলায় বৌদ্ধ অনাথ আশ্রমের পরিচালক জ্ঞান জ্যোতি ভিক্ষুকে তার স্বয়ং কক্ষে নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করে এই সন্ত্রাসী। এছাড়াও ২০০২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করে এই সন্ত্রাসী।
২০০৪ সালে রাউজানের ডাবুয়া রাবার বাগান এলাকা থেকে বিপুল পরিমান অস্ত্রসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। অনেক দিন কারাগারে থাকার পর প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের ছত্র ছায়ায় বের হয়ে আবারও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে লিপ্ত হয়। বর্তমানে এই সন্ত্রাসী রাউজান থানার অস্ত্র লুট করে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে।
মহোদয়, আপনার নিকট অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, আজ কতিপয় কিছু সন্ত্রাসীদের কারণে আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন হুমকির মুখে পতিত হয়েছে। আমরা প্রবাসীরা যারা দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে রাত-দিন পরিশ্রম করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি তাদের পরিবারের জীবন আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
আমি একজন প্রবাসী হিসেবে আপনার নিকট আমার এবং আমার ভাইয়েদের বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনাটির সুষ্ঠ তদন্ত করে অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
চাটগাঁ নিউজ/উজ্জ্বল/জেএইচ