সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরশাদুল বাচ্চুর বিরুদ্ধে সেন্টাল প্লাজায় দোকান দখলের মামলা

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ও সাবেক এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আরশাদুল আলম বাচ্চুর বিরুদ্ধে ৪০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
গত ২১ আগষ্ট চকবাজার থানায় মামলাটি হলেও ২৫ আগষ্ট মামলার বিষয়ে জানাজানি হয়। মামলায় ধারা ১৪৩/৪৪৮/৪০৩/৫০৬ পেনাল কোডে অভিযোগ আনা হয়।মামলায় চট্টগ্রামের চকবাজার থানাধীন সেন্টাল প্লাজা মার্কেটের বেশ কয়েকটি দোকান অস্ত্রের মুখে দখল করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সন্ত্রাসী অফিস করে টর্চারসেল করার অভিযোগ করা হয়। এতে মামলার বাদি মোস্তফা আলম কিশোরের ৪০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়।অভিযুক্ত আরশাদুল আলম বাচ্চু নগরীর চান্দগাঁও থানার হরিচাদ মাঝির বাড়ীর দেলা মিয়ার সন্তান। মামলায় যুবলীগের আরো ৪জনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন- পশ্চিম খুলশী পারফেক্ট ভিলেজের মুহাম্মদ মীর হোসেনের সন্তান মুহাম্মদ হাফিজ উল্লাহ আমিন ডিমুর (৪২), গরীবুল্লাহ হাউজিং সোসাইটির জোবাইর চৌধুরী (৪২) ও ওমর ফারুক (৩২)।

 

মামলার বাদি মোস্তফা আলম কিশোর এজাহারে উল্লেখ করেন, সেন্টার প্লাজায় তাঁর ১২৫ শতক জায়গা রয়েছে। মার্কেটের মালিক ইসমাইলের মেজ ভাই মোঃ ইব্রাহিম থেকে আরশাদুল আলম বাচ্চু ও হাফিজ উল্লাহ আমিন ডিমুর কিছু জমিসহ ফ্লোর ২০১৭ সালে বায়নানামা করেন। ওই সময় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এবং অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে অধৈক টাকা বকেয়া রেখে আরশাদ আলমরা জোরপূর্বক রেজিস্ট্রি করে নেন। পরে মার্কেটের চতুর্থ তলায় তাঁরা ৩০১ নং অফিসটি ভাড়া নেন। এরপর ২০১৭ সালের ১৫ মে মোস্তফা আলম কিশোরের মালিকানাধীন দোকান নং-৩০২ (এ), ৩০২ (বি), ৩০৪, ৩০৫, ৫১২, ৫১৩, ৫১৪, ২১৯ জোরপূর্বক দখল করে নেন। সেখানে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দলীয় অফিসে পরিণত করে।

মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, আরশাদুল আলম বাচ্চু ও মোহাম্মদ হাফিজ উল্লাহ আমিন তিমুর উক্ত ৩০১ ও ৩০২ নং অফিস রুম টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করত। তাঁরা ২০১৭ সাল থেকে মার্কেটে বাদির নিয়ন্ত্রানাধীন সকল সাইন বোর্ড, বিল বোর্ড, মোবাইলের টাওয়ারের বাৎসরিক বিল ৫ কোটি টাকা করে ২০১৭ হতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সর্বমোট ৪০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।

গত ২৭ মার্চ মার্কেটে লিফ্ট লাগানোর বিষয়ে আরশাদ আলমের সাথে মোস্তফা আলম কিশোর মোবাইল ফোনে কথা বললে তাকে মার্কেটের চার তলা থেকে ফেলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। সর্বশেষ ৭ আগষ্ট আমাকে ফোন করে এরশাদুল আলম বাচ্চু হত্যার হুমকি দেয়।

এদিকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আরশাদুল আলম বাচ্ছু ছাত্রলীগের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে গত ১৫ বছরে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখল বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।

চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, রাজনৈতিক সাইনবোর্ড দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের বিষয়ে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে আরশাদুল আলম বাচ্চুর মুটোফোনে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি। তবে হাসিনা সরকারে পতনের পরপরই বাচ্চু বিদেশে পালিয়ে গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। বাচ্চু বিমানে ব্যাগ গোছানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হলেও এর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস

Scroll to Top