চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশিকে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁসের সাইফার মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে দুই পিটিআই নেতার উপস্থিতিতে বিশেষ আদালতের বিচারক আবুল হাসনাত জুলকারনাইন এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
দ্য ডন বলছে, সর্বশেষ এ রায়ের মাধ্যমে দ্বিতীয়বার দণ্ডিত হলেন ইমরান খান। এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট তোশাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এ তারকা ক্রিকেটার।
ডন বলছে, বিশেষ আদালতের বিচারক আবুল হাসনাত জুলকারনাইন মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। শুনানির শুরুতে ইমরান এবং কোরেশিকে পাকিস্তান দণ্ডবিধির ৩৪২ ধারার অধীনে একটি প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছিল।
ইমরান তার বক্তব্য রেকর্ড করার পরে আদালত তাকে সাইফারের অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। যার উত্তরে ইমরান বলেন: ‘আমি আমার বিবৃতিতে একই কথা বলেছি যে, আমি জানি না। সাইফার আমার অফিসে ছিল।’
এদিকে গত ২৯ জানুয়ারি ইমরান এবং কোরেশি আদালতে মেজাজ হারিয়ে চিৎকার করতে শুরু করার কারণে শুনানি স্থগিত করা হয়। এর একদিন পরে এ রায় আসে।
রায় ঘোষণার পরপরই বর্তমান ভারপ্রাপ্ত পিটিআই চেয়ারম্যান গোহর আলি খান দলীয় কর্মীদের চুপ করে না থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি রায়ের সময় আইন হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
ইসলামাবাদ হাইকোর্টে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত পিটিআই চেয়ারম্যান গোহর সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন থেকে আমাদের মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ৮ ফেব্রুয়ারির পর সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। সংবিধান ও আইনের তোয়াক্কা না করেই পিটিআই প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা চালানো হচ্ছে। মামলার শুনানিকারী বিচারক নিজেই প্রশ্ন করছেন।’
উচ্চ আদালত এবং সুপ্রিম কোর্টে বিশ্বাস রয়েছে উল্লেখ করে এ পিটিআই নেতা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে এবং সেই নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে এ রায় ঘোষণা করা হলো। এছাড়া নির্বাচনকে সামনে রেখে পিটিআই দলটির ওপর রাষ্ট্রীয় দমন পীড়ন চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে এবং নির্বাচনী প্রতীক ছাড়াই (পিটিআই) এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন- ২০২৩ এর অধীনে গত বছর বিশেষ আদালত স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে আদিয়ালা কারাগারে মামলার শুনানি চলছিল।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের এপ্রিলে জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয় ইমরান খানকে। এরপর তার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়। সেনা সদর দপ্তরে হামলাসহ ৯ মের সহিংসতার ঘটনায় তাকে কমপক্ষে ১২টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সূত্র: জিও, দ্য ডন
চাটগাঁ নিউজ/এমএসআই