শিক্ষার্থীদের চাপে পদত্যাগপত্রে সই চবি শিক্ষকের

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: শিক্ষার্থীদের চাপে পড়ে পদত্যাগপত্রে সই করতে বাধ্য হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন এবং অতীতে ছাত্র হত্যায় সম্পৃক্ত ছিলেন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এভাবে পদত্যাগ হয় না। শিক্ষকের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-নীতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে পদত্যাগপত্রে সইয়ের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রণ্টু দাশ দ্রুত ক্যাম্পাস ছেড়ে বের হয়ে যান।

শিক্ষার্থীরা জানান, রণ্টু দাশ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। ২০১২ সালে ছাত্রশিবির নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাসুদ বিন হাবিব এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোজাহিদুল ইসলামের হত্যায় তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছিল।

এছাড়া গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরুর পর রণ্টু দাশ সরাসরি শিক্ষার্থীদের বিরোধিতা করেছিলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চবির সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী বলেন, রণ্টু দাশ একজন ফ্যাসিবাদের দোসর। শিক্ষক হওয়ার মতো কোনো যোগ্যতাই তার নেই। ২ দশমিক ৯৪ সিজিপিএ নিয়ে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারেন না। তিনি দলীয় প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষক হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন তিনি।

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি চবির সহকারী অধ্যাপক রণ্টু দাশ।

চবির ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শামীমা হায়দার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী যা হওয়ার হবে। এভাবে পদত্যাগপত্রে সই করলেই পদত্যাগ হয়ে যায় না। সবকিছুর নিয়ম আছে। দীর্ঘদিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হয়তো শিক্ষার্থীদের মনে হয়েছে, তাকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টিও পুরনো।

জানতে চাইলে চবি প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, ছাত্র হত্যায় অভিযুক্ত শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা ওই সময়কার কয়েকটি পত্রিকার প্রতিবেদন আমাদের দেখিয়েছেন, যেখানে দেখা গেছে তিনি হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি। পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছিল। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে উনি একটি পদত্যাগপত্র লিখেছেন ও সেখানে সই করেছেন। পদত্যাগ জোর করে কিংবা কারও চাওয়ামাত্র হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হবে।

এদিকে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যাসহ ক্যাম্পাসে হত্যাকাণ্ডে জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তদন্তের মাধ্যমে চাকরিচ্যুতির দাবি জানান। এ ছাড়া নিয়োগের নীতিমালা শিথিল করে অথবা নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে যাদের অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদের নিয়োগ বাতিলের দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা।

 

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top