নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী অথৈ ধর। চট্টগ্রাম শহরের অনেক জায়গার চেয়ে পিছিয়ে থাকা দক্ষিণ কাট্টালীর বাসন্তী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। সেই অথৈ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন। এই অভাবনীয় সাফল্যে খুশি তার পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ফল ঘোষণা করেন।
অথৈ ধর চাটগাঁ নিউজকে বলেন, আমার অনেক ভালো লাগছে। রেজাল্ট ভালো হবে সেটা জানতাম, কিন্তু প্রথম হব সেটি চিন্তা করিনি। আমার টার্গেট ছিল এক থেকে ১০ এ থাকার।
তিনি আরও বলেন, একটি সমস্যা নিয়ে আমার এক শিক্ষকের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘ইউ আর নট ফিট ফর ঢাবি।’ এই কথাটা আমাকে অনেক হিট করেছিল। এরপর থেকে আমি নিজেকে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করি।
পড়াশোনার কৌশল সম্পর্কে অথৈ বলেন, ‘পরিকল্পিত পড়াশোনা করছি। নিজেকে যাচাই করার জন্য অনেক প্রি এক্সামে অংশ নিয়েছি, যা আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যে টপিকগুলো থেকে প্রশ্ন হয়, সেগুলো ছাড়া বাড়তি কিছু পড়িনি। কোশ্চেন ব্যাংক সলভ করে টপিকগুলো নিয়ে ধারণা নিয়েছি।’
অথৈ ধরের বাবা বিপুল ধর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি বলেন, আমি ছোট একটি চাকরি করি। আমার স্ত্রী গৃহিণী। মেজ মেয়ে নবম শ্রেণিতে এবং ছোট মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। সাড়ে চার বছরের একমাত্র পুত্র এখনো স্কুলে যাওয়া শুরু করেনি। অথৈ ছাত্রী হিসেবে মেধাবী। তার কলেজের শিক্ষকেরাই তাকে প্রয়োজনীয় গাইডলাইন দিয়েছেন। তিনি জানান, কোনো স্মার্ট ফোন তাদের ঘরে নেই। একটি বাটন ফোন দিয়েই প্রয়োজন সারেন। অথৈ লেখাপড়ার ব্যাপারে সবসময় খুবই সিরিয়াস ছিল। সে তার পরিশ্রমের ফল পেয়েছে।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ ইউনিটে ৩৪ হাজার ৩৬৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৪ হাজার ৫৮২ জন। ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থীর হার ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। অথৈ ধরের প্রাপ্ত নম্বর ১০৫ দশমিক ৫০।
এই ইউনিটে মোট ১ হাজার ৫০টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা থেকে উত্তীর্ণদের জন্য ৯৩০টি, মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণদের জন্য ২৫টি এবং বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণদের জন্য ৯৫টি আসন বরাদ্দ রয়েছে।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ