সিপ্লাস ডেস্ক: বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্যোগে ‘রোহিঙ্গাদের চোখে জীবন’ শিরোনামে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের টেম্পোরারি এক্সিবিশন হলে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী ১০ জুলাই পর্যন্ত চলবে।
প্রদর্শনীতে ১৯ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী ফটোগ্রাফারের লেন্সের মাধ্যমে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরের জীবনকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আর্কাইভ থেকে নেওয়া ১০টি ছবিতে ১৯৭১ সালে শরণার্থী হতে বাধ্য হওয়া বাংলাদেশিদের পরিস্থিতির দালিলিক প্রমাণের সঙ্গে এই প্রদর্শনীটি বর্তমানে রোহিঙ্গাদের এবং অর্ধশতাব্দী আগের বাংলাদেশিদের জীবনের মধ্যে সহমর্মিতার এক সামঞ্জস্য তুলে ধরছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও বলেন, এই ছবিগুলো শরণার্থীদের দৃঢ়তা ও তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য তাদের আশার প্রমাণ। আমরা আশা করি এই প্রদর্শনী শুধু রোহিঙ্গাদের সংকটই নয়, তাদের অটল সাহস এবং এই সংকটের সমাধানের জরুরি প্রয়োজনের ওপর আলোকপাত করবে। তাদের প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে টেকসই রাজনৈতিক ও আর্থিক সহায়তা। শরণার্থীদের সুরক্ষা ও সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের অবশ্যই দ্রুত প্রয়োজনীয় তহবিল বাড়াতে হবে।
রোহিঙ্গা ভাষায় প্রদর্শনীটির শিরোনাম ‘জিন্দিগি রোহিঙ্গার সুকোর্তু’ হলো রোহিঙ্গাটোগ্রাফার নামের একটি গ্রুপের প্রাণবন্ত অভিব্যক্তি। ইউএনএইচসিআর-এর সহায়তায় শরণার্থীদের নেতৃত্বাধীন এই প্রকল্প রোহিঙ্গাদের নিজস্ব আখ্যান ও সৃজনশীলতাকে তুলে ধরে।
রোহিঙ্গাটোগ্রাফার দলের প্রতিষ্ঠাতা সাহাত জিয়া হিরো, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের কিউরেটর আমেনা খাতুন এবং রোহিঙ্গাটোগ্রাফারদের পরামর্শক ডেভিড পালাজনের সংগৃহীত ছবিগুলো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অদম্য চেতনাকে ধারণ করে; আর তার সাথে আছে রোহিঙ্গা শিবিরের কোলাহলপূর্ণ রাস্তা থেকে শুরু করে সেই এলাকার পাহাড়ের মনোমুগ্ধকর ছবি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুজন শরণার্থী ফটোগ্রাফার। তারা দর্শকদের নিজ মুখে বলেছেন তাদের জীবনের গল্প। প্রদর্শনীর পাশেই ছিল রোহিঙ্গা শিবিরের ঘরগুলোর আদলে গড়ে তোলা একটি ছোট আশ্রয়কেন্দ্র, যা আগত দর্শকদের সাহায্য করেছে রোহিঙ্গাদের সামাজিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশ কল্পনা করতে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারা যাকের বলেন, এই প্রদর্শনীতে ইউএনএইচসিআর-এর সাথে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা সম্মানিত বোধ করছি। এটি মানুষকে শরণার্থীদের কাছ থেকে শরণার্থীদের জীবন সম্পর্কে জানার সুযোগ দিচ্ছে এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশান্তরী বাংলাদেশিদের স্মৃতিচারণের সুযোগ দিচ্ছে।