চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামের রাউজানে দীর্ঘ ৪৮ বছরের আইনি লড়াই শেষে আদালত মাধ্যমে প্রকৃত মালিকের ওয়ারিশদের সম্পত্তি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গত ১৫ মে (বুধবার) দুপুরে রাউজানের কদলপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদীয়া সমাজের কাজী বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
যদিও এই মামলার বাদী অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। তবুও আইনী লড়াই শেষে তার ওয়ারিশরা বুঝে পেলেন পূর্বপুরুষের সম্পত্তি।
আদালতের রায়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে বিবাদীর দখলে থাকা সম্পত্তির উপর স্থাপিত দালান উচ্ছেদ করে সম্পত্তি উদ্ধারে খুশিতে আত্মহারা বাদীর ওয়ারিশগণ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৫ সালে স্থানীয় মৃত কবির আহমদ সহ তার ভাই বোনদের খতিয়ান ভুক্ত কিছু জায়গা বিবাদী দুদু মিয়া সহ অন্যরা অন্যায়ভাবে দখলে নিয়ে যায়। সেই সময় জায়গা উদ্ধারে তৎকালীন রাউজান মুন্সেফী কোর্টে স্বত্ব সাব্যস্ত মামলা দায়ের করেন কবির আহমদ সহ তার ভাইয়েরা ।
১৯৭৯ সালে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞাসহ মামলাটি বাদী পক্ষ জয় লাভ করে এবং মানবিক দিক বিবেচনায় ১২০ বর্গফুট জায়গা রান্না ঘরের জন্য বিবাদীদের ছেড়ে দেন। একই সালে চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতে আপিল করে বসে দখলদার বিবাদীরা। এতেও পরাজিত হন তারা।
পরবর্তীতে হাইকোর্ট বিভাগ (চট্টগ্রাম বেঞ্চে) ১৯৮৩ সালে এবং ১৯৯০ সালে সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে আপিল দায়ের করে আরো একবার পরাজিত হয়। তারপর ১২০ বর্গফুট রান্না ঘরের জন্য দেওয়া জায়গা সহ বিবাদী আদালতের আদেশ অমান্য করে দখলে নিয়ে নেয় ৯০০ বর্গফুটেরও অধিক জায়গা এবং নির্মাণ করে সীমানা প্রাচীর। এতে পুনরায় নিয়ম অনুযায়ী নিম্ন আদালতে বাদীপক্ষ ১৯৯১ সালে মিস মামলা দায়ের করলে আদালত কমিশন নিয়োগ করেন এবং আদালত অমান্য করায় বিবাদীগণকে ৪২ দিনের সাজা প্রদান করে জায়গা বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেন।
এরপর শাস্তি মওকুফের জন্য বিবাদী হাইকোর্টে আপিল করার বিষয় সহ বিভিন্ন আইনি জটিলতার অবসান ঘটিয়ে ১৫ মে ২০২৪ সালে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে জায়গার প্রকৃত মালিক বাদীর উত্তরসূরীদের দখল বুঝিয়ে দেন আদালত।
বাদী কবির আহমদের ওয়ারিশ কাজী মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, মামলার বাদীগণ মারা গেলেও বিবাদী এখনো জীবিত। উনি উনার কৃতকর্মের ফল দেখে গেছেন। আইন নিজের গতি চলে এই কথাটি এই ঘটনার মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হল।
অভিযান পরিচালনাকালে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহকারী জজ রাউজান চট্টগ্রামের পক্ষে নাজির (ভারপ্রাপ্ত) রাজু বৈদ্য, জারীকারক মুহাম্মদ উজ্বল মিয়া, সার্ভে কমিশনার এডভোকেট মুহাম্মদ সোহেল, রাউজান থানার এসআই কিশোর কুমার দে।
আদালত ফোর্স সহ পুলিশ ফোর্স উচ্ছেদ অভিযানে সহায়তা করে। এসময় স্থানীয় সার্ভেয়ার সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
চাটগাঁ নিউজ/এআইকে/এসআইএস