চাটগাঁ নিউজ ডেস্কঃ খেজুর ছাড়া ইফতার যেন অসম্পূর্ণ। রমজানের ইফতারে খেজুর লাগবেই, এমনটাই চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। তবে রমজানের মাসখানেক আগেই খেজুরের আড়ত ও পাইকারি বাজারে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা।
নগরীর ফলমণ্ডি ও হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা এলাকায় গিয়ে সরাসরি দেখা যায়, ভালো মানের যে আজওয়া, মরিয়ম খেজুরগুলো ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় পাইকারিতে বিক্রি হতো তা এখন দেড় হাজার টাকার বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।
বর্তমান বিশ্বে ডলার সংকট, বুকিং রেট ও পরিবহন ব্যয় বেশি ইত্যাদি নানা কারণ দেখিয়ে খেজুরের দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে মনে করছেন ভোক্তারা। বিভিন্ন মাদ্রাসা-মসজিদ ও বাজার কেন্দ্রিক স্থায়ী খেজুরের দোকান, ভাসমান খেজুরের দোকানগুলোতে বিক্রি কমে গেছে অনেকটা। করোনার পর রিকশাভ্যানে, ফুটপাতে যেভাবে খেজুর বিক্রি হয়েছিল তা-ও এখন চোখে পড়ে না। কারণ হিসেবে দোকানিরা বলছেন, দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা কম কিনছেন। তবে সুপারশপ, বড় বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, পাইকারি দোকান ও আড়তে ভালো মানের খেজুরের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।
নগরীর ফলমণ্ডি এরাবিয়ান ডেটসের স্বত্বাধিকারী শহীদুল ইসলাম চাটগাঁ নিউজকে জানান, রমজানের ইফতারে খেজুরের চাহিদা বেশি থাকলেও সারা বছর কিন্তু খেজুর মোটামুটি বিক্রি হয়। পুষ্টিগুণের কারণে নানাভাবে খেজুরের ভোক্তা বাড়ছে। আজওয়া, সুক্কারি, সাফাবি, সাগাই, মাবরুম, মেদজুল, আম্বার, জাহেদি বিভিন্ন জাতের খেজুর রপ্তানি করে মিসর, সৌদি আরব, ইরান, আলজেরিয়া, ইরাক। গত বছর রমজানে আমরা যে খেজুর ৫০০-৭০০ টাকা বিক্রি করেছিলাম তা এখন দেড় হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে কম দামি যে জাহেদি খেজুর ভোক্তা পর্যায়ে ১৫০-২০০ টাকা ছিল তা এখন আড়াইশ টাকা। আশাকরি রমজানে বাজার স্থিতিশীল থাকবে।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে জাহাজে যেসব খেজুর আমদানি হয় তার ছাড়পত্র দিয়ে থাকে উদ্ভিদ সঙ্গ নিরোধ কেন্দ্র। কেন্দ্রের প্রধান উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় সাত মাসে খেজুর আমদানি হয়েছে ৪৪ হাজার ৬৩৪ টন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে খেজুর আমদানি হয়েছে ৬ হাজার ১৬৯ টন, গত ডিসেম্বরে এসেছে ৬ হাজার ১৬ টন। আরও খেজুর পাইপলাইনে আছে।
একজন আমদানিকারক জানান, খেজুর আমদানি কমার অনেক কারণ আছে। প্রথমত খেজুরের চালানের শুল্কায়নে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এখন মানভেদে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৭৫ টাকা পর্যন্ত শুল্ক দিতে হচ্ছে। একসময় ভালো মন্দ সব খেজুরের শুল্কহার ছিল নামমাত্র। সব মিলে পড়তা পড়ছে বেশি।
চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন