সিপ্লাস ডেস্ক: গত মে মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৯১টি। এতে নিহত হয়েছে ৪০৮ জন এবং আহত ৬৩১ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৬৭ এবং শিশু ৭৮ জন। এই সময়ে ৬টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত ও ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ২৫টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্টনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে মে মাসের সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য একটি প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, মে মাসে ১৫৬টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৪১ জন নিহত হয় যা মোট নিহতের ৩৪.৫৫ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩১.৭৭ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১০৪ জন পথচারী নিহত হয়েছে যা মোট নিহতের ২৫.৪৯ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৭২ জন অর্থাৎ ১৭.৬৪ শতাংশ।
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৪১জন বা ৩৪.৫৫ শতাংশ, বাস যাত্রী ৬জন বা ১.৪৭ শতাংশ, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ট্যাঙ্কার আরোহী ৩৬জন বা ৮.৮২ শতাংশ, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স আরোহী ১৮জন বা ৪.৪১ শতাংশ, থ্রি-হুইলার যাত্রী ৬৮জন বা ১৬.৬৬ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-মাহিন্দ্র-ইটভাঙ্গা মেশিন গাড়ি) ১৫জন বা ৩.৬৭ শতাংশ এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশা ভ্যান আরোহী ২০জন বা ৪.৯০ শতাংশ নিহত হয়েছে।
দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরণ
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৬৫টি বা ৩৩.৬০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২০১টি বা ৪০.৯৩ শতাংশ আঞ্চলিক সড়কে, ৭৩টি বা ১৪.৮৬ শতাংশ গ্রামীণ সড়কে, ৪৮টি বা ৯.৭৭ শতাংশ শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৪টি বা ০.৮১ শতাংশ সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার ধরণ
দুর্ঘটনাসমূহের মধ্যে ৭১টি বা ১৪.৪৬ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৩৬টি বা ৪৮.০৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৭টি বা ২১.৭৯ শতাংশ পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৫৪টি বা ১০.৯৯ শতাংশ যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ২৩টি বা ৪.৬৮ শতাংশ অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনসমূহ
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে- ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ড্রামট্রাক-তেলবাহী ট্যাঙ্কার ২৯.২০ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-পাজেরো ৫.১২ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১৩.৬৭ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২৩.৭৮ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-বেবিট্যাক্সি-মিশুক) ১৬.৬৬ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-করিমন-ভটভটি-চান্দের গাড়ি-টমটম-মাহিন্দ্র-ডাম্পার-লোবেট-ইটভাঙ্গার মেশিন গাড়ি-ধানমাড়াই গাড়ি) ৪.২৭ শতাংশ, বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ৩.৮৪ শতাংশ এবং অজ্ঞাত গাড়ি ৩.৪১ শতাংশ।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৭০২ টি। এর মধ্যে ট্রাক ১১৪, বাস ৯৬, কাভার্ডভ্যান ২৩, পিকআপ ২৭, ট্রাক্টর ৯, ট্রলি ১৩, লরি ৬, ড্রাম ট্রাক ৯, তেলবাহী ট্যাঙ্কার ৪, মাইক্রোবাস ১১, প্রাইভেটকার ১৬, অ্যাম্বুলেন্স ৭, পাজেরো ২, মোটরসাইকেল ১৬৭, থ্রি-হুইলার ১১৭, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৩০, বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ২৭ এবং অজ্ঞাত গাড়ি ২৪ টি।
দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণ
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ভোরে ঘটেছে ৫.২৯ শতাংশ, সকালে ২৫.২৫ শতাংশ, দুপুরে ২৮.৭১ শতাংশ, বিকেলে ১২.২১ শতাংশ, সন্ধ্যায় ৮.৯৬ শতাংশ এবং রাতে ১৯.৫৫ শতাংশ।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১৩৪টি দুর্ঘটনায় ১০২ জন নিহত হয়েছে ঢাকায়। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২১টি দুর্ঘটনা এবং বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। একক জেলা হিসেবে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ২৯টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত হয়েছে। সবচেয়ে কম শরীয়তপুর ও রংপুর জেলায়।