মিরসরাইয়ে খাল দখল করে মাছচাষ, পানিবন্ধি হাজার মানুষের দুর্ভোগ!

বাবলু দে, মিরসরাই : মিরসরাইয়ে ইছাখালী ইউনিয়নের চুনি মিঝির টেক এলাকায় প্রভাবশালীরা খাল দখল করে মাছ চাষ করায় পানিবন্ধি শতশত পরিবার। ১০ দিন ধরে পানিবন্দী ৫ শত পরিবারে দুবেলা রান্না করে খাওয়া-দাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ রাতে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। এলাকাবাসীরা প্রতিবাদ করলে জায়গা বিক্রির জন্য চাপ দিচ্ছে প্রভাবশালীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি খাস জমি দখল করে অনেক দিঘী খনন করা হয়েছে। আবার কেউ কেউ সড়কের পাশে ও ফসলি জমি কেটে এই দিঘী খনন করেছে। পানি চলাচলের খালও দখল করে রেখেছে তারা। সামান্য বৃষ্টি পানিও চলাচলের কোন রাস্তা নেই। এলাকার অধিকাংশ পরিবারের বসতঘরে ঢুকে যায় বৃষ্টির পানি।

স্থানীয়দের অভিযোগ ইয়াছিন, হারুন, সুজন, নাজিম, মুসা, কামরুল, আজগর, রসূল আহম্মদসহ অনেকের দিঘী রয়েছে এই জায়গায়। তারা পানি চলাচলের কোন ধরণের জায়গা রাখেনি। একমাত্র পানি চলাচলের কোম্পনী নগর খালটির শ্রেণি পাল্টে ছোট করে ফেলেছে। যে কারণে বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে। ১০ দিন ঘরে পানিবন্ধি অনেক পরিবার। এতে বিপাকে পড়েছে শিশু, বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগিরা আরও জানান, টিউবলের পানি উঠছে না। পানির জন্য ১ কিলোমিটার হাঁটা লাগে। পানি চলাচলের জন্য অনেক বড় খাল ছিল। মাছ চাষীরা দীঘি খনন করে খালের জায়গাও দখল করে নিয়েছে। এখন পানি চলাচলের কোন জায়গা নেই। হালকা বৃষ্টি হলে পানি জমে প্রায় ৫ শত পরিবারকে কষ্ট পোহাতে হয়।

এ বিষয়ে ইছাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তাফা বলেন, ‘খালটা যদি পুনরুদ্ধার করা না হয় এ পানি সম্পূর্ণভাবে নিষ্কাষন করা সম্ভব নয়। তাই এর জন্য সরকারি উদ্যোগ দরকার। পানি উন্নয়ন বোর্ড যে পরিকল্পনা করেছে তাতে হয়তো আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে কাজ হতে পারে। এই অবস্থায় আমরা প্রশাসনিকভাবে চেষ্টা করছি দ্রুত কাজ করতে। স্থানীয়ভাবে আমরা শতাধিক লোকজন নিয়ে খাল খননের চেষ্টা করছি।

মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, ‘সেখানে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে নির্দেশনা দিয়ে এসেছি কোনোভাবে যেন জলাবদ্ধতা তৈরি না হয়। দ্রুত সময়ে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে খাল খননের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খালে এবং খাস জায়গায় কোন অবৈধ স্থাপনা থাকলে সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে। ’

পানিবন্ধি লোকজনের লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, ‘খালে এবং খাস জায়গায় কোন অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠলে তা উচ্ছেদ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাছাড়া কোনো ফ্যাক্টরির কারণে নালা ও খালের মুখ বন্ধ হয়ে থাকলে তা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

চাটগাঁ নিউজ/এআইকে/এসএ

Scroll to Top