বাঁশখালী প্রতিনিধি: প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুম শুরু হতে না হতেই চট্টগ্রাম বাঁশখালীতে শুরু হয় পাহাড় কেঁটে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গৃহ নির্মাণ,পাহাড় কেঁটে মাটি বিক্রি,পাহাড়ের সরকারি গর্জন সাবাড় সহ হরেক রকম নির্বিচার চলে পাহাড়ের সাথে। স্থানীয় বনবিভাগ বলছে আমরা একাধিক মামলা উচ্ছেদ করলে ও জামিনে এসে ফের বহাল তবিয়তে চলে এসব কাজ। পুরো বাঁশখালীতে সিন্ডিকেট করে এসব কাজ চলায়। এমন কি গোলাগুলি ও ঘটেছে বহুবার।
এমনই ঘটনা ঘটেচ্ছে প্রতিনিয়ত বাঁশখালী’র পাহাড়ি জনপদে। তবে, সমুদ্র উপকূল এলাকায় ও বাঁশখালী’র সাঙ্গু নদীর ভাঙ্গণের ফলে নিরুপাই হয়ে ঔ সব লোক গুলো প্রতি শতক পাহাড় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভাবে বনবিভাগের পাহাড় চুক্তি করে গৃহ নির্মাণ করে। আবার জমি ভরাট ব্যবহার হচ্ছে এই মাটি।
অন্য দিকে বর্ষার ভরা মৌসুমে পাহাড় ধ্বংসের মত একাধিক ঘটনা ও ঘটেছি উক্ত এলাকা গুলোতে। উপজেলা বন বিভাগ অভিযান আর উচ্ছেদ করতে করতে এক ধরনের অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে বলে ও জানা যায়।
গতকাল সরেজমিনে বাঁশখালী’র পাইরাং এবং চেঁচুরিয়া পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পথে পথে ডাম্পার গাড়ির চাপ সোজা মাঠি কাটার পয়েন্ট পযর্ন্ত। সেখানে পাহাড় কাঁটতে কাঁটতে এক ধরণের ময়দানে পরিনত হয়ে গেল। ধারণা করা যায় এই বছর ১ কোটি ঘনফুট পাহাড় কাঁটা শেষ প্রায়।
অন্য দিকে বিট কর্মকতা শফিকুল ইসলাম বলেন, বন বিভাগের পাহাড় কেঁটে মাটি বিক্রি বিষয়টি আমার নজরে আসলে আমি সাথে সাথে আমার সঙ্গীয় একজন বন কর্মকতা সহ গিয়ে বাঁধা দিলে তারা আমার উপর তেড়ে এসে। উল্টো আমাদের ওখানে আর বিরক্ত কিংবা বাঁধা দিতে নিষেধ করেছে।
আমি যদি পারি পাহাড় কাঁটা বন্ধ করবো নাইলে আবার ও মামলা দিবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই বিষয়ে বলেন, আপনি একটু খবর নিয়ে দেখেন আমি রিদুয়ান বাহিনীর অত্যাচারের স্বীকার হয়েছি। বনের মামলা সহ তাদের বিরুদ্ধে ডজন খানেক মামলা আছে। স্থানীয় বনবিভাগ ও প্রশাসন অনেক অভিযান করে ও কাজ হচ্ছে না।
এই বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মাঠি জসিম সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার সাথে সাথে কল কেঁটে দিয়ে এডিয়ে যায়। অন্য দিকে এলাকায় তাদের সাথে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ও পাওয়া যায় নি।
এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রেঞ্জার এমদাদুল হক বলেন, পাহাড় কেঁটে গৃহ নির্মাণের বিষয়টি আমি জেনেছি আমার বিট কর্মকতা শফিকুলের মাধ্যমে। তবে আমি একটু ছুটিতে যাচ্ছি ওখানে থেকে ফিরে অল্প দিনের মধ্যে এটার বিরুদ্ধে অভিযান আর মামলা দুইটাই করবো বলে জানান তিনি।
এলাকাবাসীরা জানায়, আমাদের এলাকার মোহাম্মদ রিদুয়ান,নুর হোসেন ফকির, ইদ্রিস মাঠি জসিম মিলে প্রতিরাতে ১০ থেকে ১৫ টা ট্রাক এবং দুই টা স্কেবেটর দিয়ে প্রতিনিয়ত পাহাড়ের লাল মাঠি খনন করে গাড়ি প্রতি চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা বিক্রি করে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের উল্টো মামলার ভয় দেখায়। অন্য দিকে বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি এই পাহাড় কাঁটার জন্য জরিমানা এবং ট্রাক জব্দ করেছিল। তবুও কোন কাজ হচ্ছে না।
পুরো বাঁশখালী ঘুরে দেখা যায় একটু সন্ধা হলে সারি সারি লাইন হয় ডাম্পারের যে গুলো দিয়ে পাহাড়ের লাল মাঠি বহন করা হয়।
বিশেষ করে বাঁশখালী’র বাণীগ্রাম,বৈলছড়ি,জঙ্গল পাইরাং,নাপোড়া, এবং পুর্ব পুইছড়ি পাহাড়ি জনপদ গুলো দস্যু বাহিনীর স্ব স্ব দখলে যায়। বনবিভাগ তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে চুপ থাকে নাইলে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে চুপ থাকে।
অন্য দিকে পরিবেশবিদ এবং সুশীল সমাজ বলছে, দেশে যে ভাবে পাহাড় আর সবুজ সমারোহ নষ্ট করা হচ্ছে প্রতি বছর তার প্রভাব কিন্তুু আমরা পাচ্ছি যেমন, গরমে দিনে অতিরিক্ত গরম,শীতের দিনে অতিরিক্ত শীত, অন্য দিকে বৃষ্টির দিনে অতিরিক্ত বৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিনিয়ত পাহাড় কাঁটার জন্য পরিবেশের ভারসাম্য আসলে সটিক থাকছে না।