কামরুল ইসলাম দুলু (সীতাকুণ্ড): সীতাকুণ্ডে বড় ভাইয়ের প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শামসুল আলম প্রকাশ মো. মিয়া নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বর্তমানে ওই মাহিলা তার ৬ সন্তানকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিনযাপন করছেন।
উপজলোর ভাটিয়ারী ইউনিয়নের মাদামবিবি হাটের ২নং ওয়ার্ডের আবদুল মুনাফের নতুন বাড়ীতে এই ঘটনা ঘটে। এই বিষয়ে ভুক্তভোগী প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে রাস্তায় অনশন করছে।
অভিযোগসুত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধা শাহনাজ বেগমের স্বামী বেঁচে নেই। তার ছয় কন্যা সন্তান রয়েছে। কোন পুত্র সন্তান না থাকায় স্বামীর রেখে যাওয়া বসতঘরটিই ছিল মাথা গুজার ঠাঁই। কিন্তু স্বামীর বড় ভাই শামসুল আলম ঘরটি জবরদখল করার পায়তারা করে আসছে। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সমঝোতার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও শামসুল আলম স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় কারো বিচার সেভাবে গ্রাহ্য করেনা বলে ভুক্তভোগীর অভিযোগ।
জানা গেছে, বৃদ্ধা শাহনাজের শশুর আবদুল মুনাফের মৃত্যুর পর তার দুই পুত্র নুরুল আলম ও শামসুল আলম প্রকাশ মো. মিয়া ঔ বাড়ীতে বসবাস করে আসছিলেন। তারা যৌথ পরিবার হিসেবে একসাথেই বসবাস করতো। কিন্তু বিপত্তি বাধে নুরুল আলমের মৃত্যুর পর থেকে। যায়গাটি শামসুল আলম প্রকাশ মো. মিয়ার নামে খরিদকৃত বলে দাবি করা শুরু করা।
নুুরুল আলমের এক মেয়ে বলেন, আমার বাবা মৃত্যুর পরও আমরা চাচাসহ একসাথে বসবাস করতাম। আমার চাচার বিভিন্ন অপকর্মের কারণে আমরা ২০২০ সাল থেকে আলাদা থাকা শুরু করি। গত পনের দিন আগে আমরা মাকে নিয়ে তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যায়। হাসপাতাল থেকে তিন দিন আগে আমাদের মাকে বাড়ীতে নিয়ে আসলে ঘরের সামনে দরজায় ও গেটের সামনে তালা লাগিয়ে দেয় আমার চাচা। অসুস্থ মাকে নিয়ে আমরা রাস্তায় দিনযাপন করছি। অথচ এই অমানবিকতার কোনো সুবিচার এখনও পাচ্ছিনা। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
তিনি আরো বলেন, এই বাড়ীটি আমার বাবার নামে বি.এস জরিপ চুড়ান্ত প্রচার আছে। আমার বাবার মৃত্যুর পর আমরা ছয় মেয়ের নামেও নামজারী খতিয়ান সৃজন করা হয়েছে। খাজনাও নিয়মিত দিয়ে আসছি আমরা। অথচ আমাদেরকেই অসুস্থ মাকে নিয়ে তিনদিন ধরে ঘরের সামনে রাস্তা বসে থাকতে হচ্ছে।
অপর দিকে চাচা মো. মিয়া বলেন, এই বাড়ীটি আমার বাবা ১৯৬৭ সালে আমার নামে খরিদ করেন। ভুলবশত বি.এস জরিপে আমাদের দুই ভাইয়ের নামে জরিপ হয়েছে। আমি বি.এস খতিয়ান ভুল জরিপ দেখে গত দুই মাস আগে মাননীয় আদালতে বি.এস এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। তাই উক্ত বাড়ীটি আমার। তাই আমি আমার ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছি।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি মুজিবুর রহমান জানায়, ঘটনাটি খুবই অমানবিক, মহিলার কোন ছেলে না থাকায় তার প্রতি অমানবিক আচরণ করছে তার দেবর। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ