চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: সিনেমা আর ওটিটি’র হরেক চমক ও চাপে নাটক থেকে যখন এক এক করে সব তারকা আর বেশিরভাগ দর্শক ক্রমশ ছুটিতে যাচ্ছিলেন, তখনই যেন ভোজবাজির মতো সবাইকে চমকে দিলো ‘পথে হলো দেরী’ নামের একটি নাটক। এভাবেও বলা যায়, গোটা বছর নাটকের বাজার নড়বড়ে হলেও বছর শেষে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এলেন অপূর্ব-তটিনী।
জাকারিয়া সৌখিনের চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় দেড়ঘণ্টা ব্যাপ্তির এই বিশেষ প্রজেক্ট প্রকাশ হয়েছে ২৪ ডিসেম্বর সিএমভি’র ইউটিউব চ্যানেলে। প্রকাশের পর থেকেই গত দুদিনে এটি রয়েছে ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে। ভিউ অতিক্রম করেছে ৫০ লাখ। তারচেয়ে বড় বিষয় দর্শক ও সমালোচক প্রতিক্রিয়া।
দু’দিন ধরে ইউটিউবে নাটকটির মন্তব্যের ঘর আর সমালোচকদের ফেসবুক পোস্ট প্রমাণ করে, বছরের সেরা কাজের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে নাটকটি। বলা দরকার, নাটকটিতে অপূর্বর বিপরীতে অভিনয় করেছেন সময়ের অন্যতম তরুণ অভিনেত্রী তটিনী। আরও আছেন মনোজ প্রামাণিক ও সালাহ খানম নাদিয়া।
নাটকটি দেখার পর সোহেল রানা নামের এক দর্শক প্রতিক্রিয়া এমন, ‘নাটক তো এমনই হওয়া উচিত, যেখানে গ্রামের প্রকৃতি, কিছুটা মান-অভিমান, কিছুটা রোমান্টিক, কিছুটা দুষ্টুমি, কিছুটা বাস্তবতা, শেষে ভালবাসা, ভালবাসার মানুষকে ফিরে পাওয়া। এক কথায় নাটকটি অসাধারণ।’
ফয়সাল নামের একজন বলেন, ‘এখন সব ধরনের নাটক শহর কেন্দ্রিক হয়ে থাকে। এই নাটকটা পুরোপুরি ভিন্নধর্মী। প্রকৃতিকে ফুটিয়ে তোলার জন্য অসাধারণ হয়েছে।’
বলা দরকার, দীর্ঘ দৈর্ঘ্যের বিশেষ নাটকটির পুরো শুটিং হয়েছে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলে। যার ফলে গল্পের বাইরেও পুরো নাটকটিকে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ এর অন্যতম স্মারকও বলা যেতে পারে। দুইদিনে শুধু ইউটিউবের ঘরে প্রায় ১৫ হাজার এমন মন্তব্য পড়েছে গত দু’দিনে। যার মধ্যে শতভাগ পজিটিভ মন্তব্য। যেমনটা সচরাচর কোনও নাটক, সিনেমা বা গানের ক্ষেত্রে মেলে না।
প্রসঙ্গক্রমে নাটকটির জনক জাকারিয়া সৌখিন বলেন, ‘আমরা চেয়েছি বছর শেষে সবাই মিলে একটা মনের মতো প্রজেক্ট করতে। মনের মতো মানে, বেশিরভাগ সময়ে তো দর্শক চাহিদা বা ভিউ চিন্তা করে কাজ করতে হয়। তবে এবার আমরা অনেকগুলো মানুষ এক হয়েছি একটা নিজেদের মতো প্রজেক্ট করার। এই আমরা হলাম- আমি, শিল্পী ও প্রযোজক। তিন পক্ষ এক হয়েই কাজটি করেছি। এবং এটি করার জন্য আমরা যে পরিমাণ এফোর্ট দিয়েছি, সেটি দিয়ে এখন আর নাটক হয় বলে আমার মনে হয় না। দিনশেষে দর্শক ও সমালোচকদের পক্ষ থেকে যে প্রতিধ্বনি পাচ্ছি, তাতেই আমরা হ্যাপি। এমন সাড়া পেলে সত্যিই মনে হয়, দেশে রুচিশীল দর্শকের সংখ্যা এখনও সর্বাধিক।’
বলা দরকার, ‘পথে হলো দেরী’ সিএমভি’র ব্যানারে ‘ক্লোজআপ রোম্যান্টিক ড্রামা ফেস্টিভ্যাল’-এর তৃতীয় ও শেষ কাজ। এর আগে একই উৎসবের অংশ হিসেবে ৩০ নভেম্বর মিজানুর রহমান আরিয়ান নির্মিত ‘হদয়ে হৃদয়’ এবং ৭ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে প্রবীর রায় চৌধুরীর ‘ভালোবাসি তবুও’। দুটো নাটকই পেয়েছে দারুণ জনপ্রিয়তা। আর তৃতীয় ও শেষ কাজে এসে সেই উৎসবে যেন আগুন ধরালেন অপূর্ব-তটিনী।
তার ভাষায়, আমরা কাজ করি তো দর্শক রায়ের জন্য। তাদের ভালো লাগা মানে আমরা পরীক্ষায় পাশ করেছি। এবং এটা দেখেছি আমি, একটি কাজে যখন টিম ওয়ার্ক আর সততা থাকে; সেটাকে দর্শক মূল্যায়ন করবেই। এই কাজটিও তেমনই। ধন্যবাদ নির্মাতা জাকারিয়া সৌখিন, ধন্যবাদ প্রযোজক এসকে সাহেদ আলী, ধন্যবাদ তটিনী ও পুরো টিমকে।