চাটগাঁ নিউজ ডেস্কঃ বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ হওয়া ১৫ জেলেকে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। গত সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পূর্ব জোন। গত রবিবার রাতে এ ১৫ জেলেকে মিয়ানমার নৌবাহিনীর একটি জাহাজ থেকে উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, মাছ শিকারে গিয়ে নৌকার ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে এক সময় ভাসতে ভাসতে তারা মিয়ানমার জলসীমায় ঢুকে পড়েন। এক সপ্তাহ চলার মতো যে খাবার ও পানি সঙ্গে নিয়েছিলেন, এক পর্যায়ে তা ফুরিয়ে যায়। ৬ দিন পর মিয়ানমারের একটি মাছ ধরার ট্রলার তাদের আকিয়াব উপকূলের অদূরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে মিয়ানমার নৌবাহিনী বাংলাদেশের জলসীমায় নিয়ে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে ট্রলারসহ জেলেদের হস্তান্তর করে।
এই উদ্ধার অভিযান নিয়ে সেন্টমার্টিন কোস্টগার্ড স্টেশন কমান্ডার লে. তাকিউল আহসান চাটগাঁ নিউজকে জানান, মিয়ানমার নৌবাহিনীর মাধ্যমে খবর পেয়ে সাগরে টহলরত কোস্টগার্ডের জাহাজ গিয়ে ট্রলারসহ জেলেদের উদ্ধার করে উপকূলে নিয়ে আসে। মিয়ানমার নৌবাহিনী তাদের জলসীমায় ট্রলারটির সন্ধান পায় রবিবার সকালে। ওই দিন বিকালে তারা সংকটাপন্ন অবস্থায় বাংলাদেশি জেলেদের জলসীমায় নিয়ে এসে কোস্টগার্ডকে বুঝিয়ে দেয়। পরে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জাহাজ ওই ১৫ জেলেকে সেন্টমার্টিন নিয়ে আসে।
ভুক্তভোগী ট্রলারের মাঝি নুরুজ্জমা কালুর বর্ণনায় জানা যায়, আনোয়ারার গহিরা উপকূল থেকে গত ৩ জানুয়ারি ১৫ জেলে ওবাইদুল হক মুন্না ও মিজানুর রহমানের যৌথ মালিকানাধীন এফবি ‘মা জননী’ নামের ট্রলারটি নিয়ে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যায়। রাতে ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। সেই থেকে সাগরে ভাসছিলেন তারা। এক পর্যায়ে গভীর সাগরে চরম সংকটে পড়ে জেলেরা। এভাবে ভাসতে ভাসতে এক সময় দেশের সমুদ্রসীমা পেরিয়ে মিয়ানমার জলসীমাও পাড় হয়ে যায় ট্রলারটি। দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার না হওয়ায় এক সময় বাঁচার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন তারা।
এই উদ্ধার অভিযানে উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন মো. নুরুজ্জমা কালু, আবদুল মন্নান, মহিউদ্দিন, মো. রায়হান, কালু মিয়া, আলী হোসেন, মো. রাশেল, মো. মোরশেদ, মো. বোরহান, আবুল মনসুর, আলী আহমদ, আবদুল হান্নান, জালাল উদ্দিন, আবু ছাদেক ও আবদুল করিম। তাদের বয়স ১৯ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। সবার বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায়।
চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন