চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : ফেনীতে শতাব্দীর ভয়ংকর বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যুর তথ্য মিলেছে। মৃতদের মধ্যে ১০জন পুরুষ, ৪জন নারী ও ৩ জন শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জনের পরিচয় মিলেছে। বাকি ৫ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি ।
বুধবার (২৮ আগস্ট) রাতে জেলা প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এখনো অনেক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, মৃতদের মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় অজ্ঞাত ২ জন, ছাগলনাইয়া উপজেলার অজ্ঞাত এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা অপর এক পুরুষ ও এক হিন্দু নারীর পরিচয় মেলেনি।
নিহতদের মধ্যে রয়েছে পরশুরাম উপজেলার উত্তর ধনীকুন্ডা এলাকার মৃত আমির হোসেনের ছেলে সাহাব উদ্দিন (৭২), একই উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মধুগ্রামের দেলোয়ার হোসেন (৪২), ফুলগাজী উপজেলার নোয়াপুর গ্রামের শাকিলা আক্তার (২২), উত্তর করইয়া গ্রামের বেলালের ছেলে কিরণ (২০), দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে রাজু (২০), কিসমত বাসুড়া গ্রামের আবুল খায়ের (৫০), লক্ষ্মীপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ তারেক (৩২), শনিরহাট গ্রামের নূর ইসলামের মেয়ে রজবের নেচা (২৫), সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের মাবুল হকের ছেলে নাঈম উদ্দিন (২৮), ছাড়াইতকান্দি গ্রামের শেখ ফরিদের ছেলে আবির (৩), দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর করিমপুর গ্রামের নুর নবীর ছেলে নুর মোহাম্মদ মিরাজ (৮ মাস) এবং জয়লস্কর এলাকার হুমায়ুন কবিরের ছেলে জাফর ইসলাম (৭)।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবারে বন্যায় ফেনীতে ১০ লাখ মানুষ দুর্যোগের শিকার হয়েছেন। দেড় লাখ মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। অবশিষ্ট লোকজন বিভিন্ন উপজেলায় উঁচু ভবনসূমহে আশ্রয় নেয়। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া লোকজন নিজ গৃহে ফিরে যাচ্ছে।
একই সূত্র জানায়, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে আনুমানিক ৮৮ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার ও সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আনুমানিক ৬০ হাজার প্যাকেট বিতরণ করা হয়। এছাড়া স্থানীয়ভাবে ও অন্যান্য জেলা হতে আগত বেসরকারি সংগঠন ব্যক্তিগতভাবে ত্রাণ বিতরণ করে। জেলায় ১টি, বাকি ৬ উপজেলায় ৬টি এবং বেসরকারিভাবে ৭টি হাসপাতালে মেডিকেল ক্যাম্প চালু করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, বন্যায় নিহতদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। নিহতদের পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। এ বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য জেলার বিভিন্ন স্থানে মরদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া যাচ্ছে এবং বন্যার পানি থাকাকালীন অনেক লাশকে দাফনের ব্যবস্থা করতে না পেরে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে এমন নানা চিত্র ফুটে উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
চাটগাঁ নিউজ /এআইকে