নিজস্ব প্রতিবেদক : নগরীর কদমতলির ফলমণ্ডির সামনে সড়কের বিভাজকে বসেছে তরমুজের আড়ত। ফলে সড়কের দুইপাশে তরমুজ (লোড আনলোড) উঠানামার কারণে নিত্য যানজট লেগে আছে। ব্যস্ত এই সড়কে সকাল থেকে দিনভর যানজট থাকায় জনগণ ও ফলমন্ডী ব্যবসায়ীদের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ নিয়ে ফলমণ্ডির সমিতির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ১২ ব্যবসায়ী।
সোমবার সরজমিনে গিয়ে এইরকম বিশৃঙ্খলা অবস্থা দেখা যায় ফলমণ্ডি এলাকায়। সড়কের উপর দাঁড় করিয়ে ট্রাক থেকে তরমুজ আনলোড করা হচ্ছিল। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
ব্যবসায়ী ও সাধারণ পথচারীরা অভিযোগ করেন, কিছু ব্যবসায়ী ফলমন্ডির প্রবেশদ্বার ফ্লাইওভারের নিচে বসে তরমুজ বিক্রি করায় তাদের গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করিয়ে পণ্য লোড-আনলোড করতে হয়। এতে বিআরটিসিসহ সমস্ত ফলমন্ডি এলাকায় সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। এর প্রভাব ফলমণ্ডির ভেতরেও পড়ে। যানজটের ফলে তাদের (ফল ব্যবসায়ী সমিতির) তরমুজের গাড়ি ফলমণ্ডিতে প্রবেশ এবং আনলোড করে বের হতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে তারা ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। তবে সড়কের উপর এভাবে ব্যবসা করলেও ট্রাফিক পুলিশ দেখেও না দেখার ভান করছে বলে জানান তারা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বরত সার্জেন্ট আরিফ বলেন, এখানে পার্কিং ব্যবস্থা নেই, যার কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়।
রাস্তায় পার্কিং করে লোড-আনলোড করা ট্রাকগুলো থেকে টাকা নেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে এবং কৌশলে এড়িয়ে যায়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এন এম নাসিরুদ্দিন বলেন, ‘আমরা দিনের বেলায় কোনো ট্রাক ফলমণ্ডি এলাকায় পার্কিং করতে দিই না। রাত ১২টার পর পণ্য উঠানামা করলে তখন সড়কে তেমন প্রভাব পড়ে না। অবৈধ পার্কিং, ত্রুটিপূর্ণ পরিবহনসহ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
এদিকে, সড়ক বিভাজনে তরমুজের আড়ত বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে সিপ্লাসকে বলেন,।বিষয়টি আমরা আমলে নিয়েছি। শীঘ্রই এটি উচ্ছেদ করা হবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, মহানগর যুবলীগের এক নেতা এ সড়ক বিভাজকটি নার্সারির জন্য সিটি কর্পোরেশনের কাছ থেকে ইজারা নিয়েছিলেন। কিন্তু এখানে তিনি নার্সারি না করে প্লট আকারে ভাড়া দিয়ে রমরমা বাণিজ্য করছেন। এমনকি সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বিভাজকের চারপাশে রেলিং (বেড়া) করে দেওয়া হলেও অবৈধ ব্যবসায়ীরা সেগুলো ভেঙে ফেলেছেন।আর এসব কারণে দিন দিন যানজটের মাত্রা বাড়ছে।
চট্টগ্রাম ফল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. তৌহিদুল আলম বলেন, ‘সরকারি দলের কিছু নেতাকর্মী জায়গাটি ইজারা নিয়েছেন এবং তারাই ব্যবসা করাচ্ছেন। বিষয়টি সমিতির ১২ জন সদস্য লিখিতভাবে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আমি দু-একদিনের মধ্যে সিটি কর্পোরেশন, ট্রাফিকের ডিসি এবং কোতোয়ালী থানার ওসি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎ করে সমাধানের চেষ্টা করবো। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের (ফলমণ্ডির ব্যবসায়ীদের) না খেয়ে মরতে হবে।’
চাটগাঁ নিউজ/এসএ