কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের খাদেম পাড়ায় রেললাইনের পূর্বপাশে পড়েছিল আব্দুল্লাহ আল মামুনের মরদেহ। কক্সবাজারের স্থানীয় এ ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধারের চারদিন পর জানা গেল– তাকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে হত্যা করেছে ব্যবসায়িক পার্টনার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু শাহেদ হোসেন। হত্যার নেপথ্যে রয়েছে শাহেদের প্রেমিকার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও বন্ধু মামুনের কাছ থেকে ফেরত না পাওয়া।
বুধবার (১০ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন- ১৫ (র্যাব) এর উপ-অধিনায়ক মেজর শরীফ আহসান।
এর আগে শনিবার (৭ জুলাই) সকালে মামুনের মরদেহ উদ্ধারের পর শাহেদকে র্যাব হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর শাহেদকে রামু থানায় হস্তান্তর করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের উপ-অধিনায়ক মেজর শরীফ আহসান জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়া ঘাটপাড়ার বাসিন্দা মামুন ও রামু উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের মাছুয়াখালী সিকদার পাড়ার বাসিন্দা শাহেদ ব্যবসায়িক অংশীদার। শাহেদের এক ভগ্নিপতিসহ তিনজনের অংশীদারত্বে কক্সবাজার সদরের লিংকরোড এলাকায় ইলেক্ট্রনিকস পণ্যের একটি শোরুম রয়েছে তাদের।
র্যাব কর্মকর্তা শরীফ আহসান বলেন, মামুনের মরদেহ উদ্ধারের পর বিকালে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত এবং ব্যবসায়িক পার্টনার মামুনকে হেফাজতে নেয় র্যাব। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, ঈদগাঁও উপজেলার এক তরুণীর সঙ্গে শাহেদের প্রেম ছিল। সম্পর্কের একপর্যায়ে শাহেদ নিজের ফোনে দুজনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখেন। তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হলে প্রেমিকা আপত্তিকর চিত্র মুছে ফেলার জন্য শাহেদকে চাপ দেয়। তখন শাহেদ ছবিগুলো মামুনের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠিয়ে সংরক্ষণ করেন। পরে শাহেদ তার প্রেমিকার সামনে গিয়ে নিজের ফোন থেকে ওই ছবি ও ফুটেজগুলো মুছে ফেলেন।
মেজর শরীফ আরও বলেন, পরে মামুনের কাছ থেকে ওই ছবি ও ফুটেজগুলো ফেরত চান শাহেদ। কিন্তু নানাভাবে চেষ্টার পরও ফেরত নিতে ব্যর্থ হওয়ায় শাহেদ ক্ষুব্ধ হন। পরে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে মামুনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার (৬ জুলাই) রাত ৮টার দিকে কক্সবাজার শহরের ঝাউতলা এলাকার ভিশন শোরুম থেকে মামুনকে ফোনে কল দিয়ে বাহারছড়া বাজারে ডেকে নেন শাহেদ। ঈদগাঁওতে জরুরি কাজের কথা জানিয়ে একই মোটরসাইকেলে দুজনে রওনা দেন। রশিদনগর ইউনিয়নের কালিরছড়া বাজারের একটু আগে পৌঁছালে শাহেদ মোটরসাইকেলটি থামানোর জন্য বলেন। এসময় আগে থেকে সেখানে অবস্থান নেওয়া ৩-৪ জন দুর্বৃত্ত মামুনকে টেনেহিঁচড়ে রেললাইনের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে মামুনের হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ ফেলে পালিয়ে যায় তারা। পরে মামুনের ব্যক্তিগত ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে দুর্বৃত্তরা শাহেদের কাছে তুলে দেয়।
চাটগাঁ নিউজ/আছহাব/এসএ