রাঙামাটি প্রতিনিধি : প্রথমবারের মতো ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে রাঙামাটিতে জেলা পরিষদের বিরুদ্ধের দায়ের করা চারটি দুর্নীতির মামলার তদন্ত কার্যক্রম চালিয়েছে দুদক কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাঙামাটির বরকল উপজেলাধীন সুবলং, ভূষণছড়া ও ঠেগামুখ এলাকায় গিয়ে ড্রোন উড়িয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন রাঙামাটিস্থ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একজন দায়িত্বশীল উদ্বর্তন এক কর্মকর্তা।
দুদক কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, অস্থিত্বহীন ভূয়া প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে রাঙামাটি জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে একই দিনে চারটি মামলা দায়ের করে দুদক।
দুদক রাঙামাটিস্থ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক আহামদ ফরহাদ হোসেন নিজেই উক্ত চারটি মামলা দায়ের করেছিলেন। এই চার মামলায় রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য, নির্বাহী প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী, ঠিকাদার, ইউপি চেয়ারম্যান, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সর্বমোট ৯ জনকে আসামী করা হয়েছে।
রাঙামাাটি জেলা পরিষদের সদস্য সবির কুমার চাকমা, জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়া, সহকারী প্রকৌশলী জ্যোর্তিময় চাকমা, উপসহকারী প্রকৌশলী রিগ্যান চাকমা, ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে সিলেট এলজিইডিতে কর্মরত) কাজী আবদুস সামাদ, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স অমলেন্দু চাকমা’র স্বত্তাধিকারী অমলেন্দু চাকমা, মেসার্স নাংচিং এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্তাধিকারী চিংহেন রাখাইন, মেসার্স সম্মৃদ্ধি এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্তাধিকারী মিলন তালুকদার’কে আসামী করে এই চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক রাঙামাটিস্থ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক।
দুদক সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, বরকলের ৪নং ভূষণছড়া ইউনিয়নের অর্ন্তগত কামিনী চাকমার জমির উপর মৎস্য বাঁধ ও পাকা সেচ ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৩ টাকা, বরকল উপজেলাধীন সুবলং বাজারে পানীয় জলের ব্যবস্থাকরণসহ গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্পের মাধ্যমে ৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা, বরকল উপজেলাধীন সুবলং ইউনিয়নে সুবলং কমিউনিটি সেন্টার ঘর ও পাকা সিড়ি নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, বরকল উপজেলাধীন পূর্ব এরাবুনিয়া মৎস্য বাঁধ হইতে হারুন টিলা এলাকার আহাদ এর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার নামক ভূয়া প্রকল্পের মাধ্যমে ৯ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫৩ টাকা পরস্পর যোগসাজসে অপরাধমূলক অসদাচরণ এবং অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে উপরোক্ত টাকাগুলো আত্মসাৎ করে দন্ড বিধির ৪০৯/১০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সালের দূর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে মামলার গুলোর এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন।
রাঙামাটিস্থ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের দায়িত্বশীল উদ্বর্তন একজন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিবেদককে মুঠোফোনে উপরোক্ত তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ৭৫ কার্যদিবস সময়কালে উপরোক্ত মামলাগুলোর সার্বিক বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে মামলা দায়ের করে তদন্ত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করে ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে সরেজমিনে তদন্ত করেছে। দায়িত্বশীল এই কর্মকর্তা জানান, আমরা তদন্ত কার্যক্রমে অনেকদূর এগিয়েছি। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত সবকিছু মিলিয়ে এরপরের পদক্ষেপ চার্জশীট প্রদান করা।
চাটগাঁ নিউজ/আলমগীর/এসএ