চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে এক যুবককে বাসা থেকে তুলে নিয়ে মাথা ন্যাড়া করে ভিডিও করার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে খুলশী আবাসিক এলাকার সালমা ভিলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আগের রাতে ওই বাসার নিচে কেয়ারটেকারের কক্ষে ঘটনাটি ঘটে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন- সৈয়দ মাহবুব-ই-খোদা জিতু (৩৮) ও আবু তাহের (৪০)। তাদের মধ্যে জিতু চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস কে খোদা তোতনের ছেলে। তাহের তাদের ভবনের কেয়ারটেকার। রোববার রাতে আল আমিন হাওলাদার নামে এক যুবককে নগরের ঝাউতলা রেলওয়ে কলোনির বাসা থেকে তুলে নিয়ে এই নির্যাতন করেন তারা।
ঘটনার শিকার আল আমিন হাওলাদার (৩৩) ঝাউতলা রেলওয়ে কলোনির বাসিন্দা। তার বাড়ি বরিশাল জেলায়।
পুলিশ জানায়, খুলশীর ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে জিতু ও পিয়াস নামে দুজনের দুইটি কম্পিউটারের দোকান আছে। যেখান ভারতীয় ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করা হয়। আল আমিন ওই এলাকার দালাল। তিনি লোকজনকে ফরম পূরণের জন্য জিতু ও পিয়াসের দোকানে নিয়ে আসেন। কাজ করার সুবাদে আল আমিনের কাছে টাকা পান পিয়াস ও জিতু। আল আমিনের কাছ থেকে পাওনা টাকা উদ্ধার করে দিতে পারলে জিতুকে একাংশ ভাগ দেবেন বলে জানান পিয়াস। রোববার রাতে জিতু মোটরসাইকেল নিয়ে আল আমিনকে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে আসেন। এরপর তাদের বাসার নিচে কেয়ারটেকারের রুমে তাকে উলঙ্গ করে মাথা ন্যাড়া করে দেন। এ সময় ভিডিও করেন আবু তাহের।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, ‘গত রোববার রাতে জিতু ভিকটিম আল আমিনকে তার বাসা থেকে তুলে নিজের বাসার নিচে কেয়ারটেকারের রুমে নিয়ে নির্যাতন করে। তাকে উলঙ্গ করে জিতু নিজেই মাথা ন্যাড়া করে দেয়। জিতুর নির্দেশে আবু তাহের সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। ঘটনার পরপরই সোর্সের মাধ্যমে আমাদের কাছে এ তথ্য আসে। প্রাথমিক তদন্তের মধ্যেই আল আমিন থানায় এসে অভিযোগ করেন।’
‘অভিযোগ পেয়েই আমরা বাসায় অভিযান চালিয়ে জিতু ও তাদের কেয়ারটেকার আবু তাহেরকে গ্রেফতার করি। উভয়ের মোবাইলে হোয়াটস অ্যাপে উলঙ্গ করে মাথা ন্যাড়া করার ভিডিওটি পাওয়া গেছে।’
এ সংক্রান্ত দুটি ভিডিওর মধ্যে একটিতে দেখা যায়, জিতু ভুক্তভোগী আল আমীনকে একটি বাসার রুমে নিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখে। সেখানে মোবাইল ফোন বের করে কোন একটা লেখা আল আমীনকে দেখিয়ে কে লেখেছে জানতে চান। আল আমীন লেখাটি তিনি লেখেনি বলার পর রেজার দিয়ে তার মাথার চুল ন্যাড়া করে দেয়।
অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মাথা অর্ধেক ন্যাড়া অবস্থায় জিতু হেলমেট পড়িয়ে আল আমীনকে একটি সেলুনে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে পুরো মাথা ন্যাড়া করে দেয়।
ওসি নেয়ামত উল্লাহ জানান, গ্রেফতার দু’জনকে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ