শ্বাসরোধ করে শাশুড়িকে খুন, জামাই গ্রেফতার

চাটগাঁ নিউজ ডেস্কঃ নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকায় টাকাপয়সার বিরোধে ভাগ্নি জামাইয়ের হাতে মঞ্জু দেব (৫২) নামে এক নারী হত্যার প্রধান আসামী গ্রেফতার হয়েছে।

রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ফটিকছড়ি থেকে অভিযুক্ত ভাগ্নি জামাই লিটন কান্তি দে’কে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে মোহাম্মদপুর আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা সংলগ্ন নাজিরপাড়া থেকে নিহত মঞ্জু দেবের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। শুধু মঞ্জু দেব নয়, লাশ উদ্ধারের সময় ওই বাসা থেকে তার ছেলে উত্তম দেবকেও অর্ধচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

এই বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা চাটগাঁ নিউজকে জানান, আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে ভাগ্নি জামাইয়ের হাতে খুন হন মঞ্জু। এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লিটন তার মাসি শাশুড়িকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে বলে স্বীকার করেছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘আসামির স্বীকারোক্তি মতে জানতে পারি, শুক্রবার রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে তিনি তার মাসি মঞ্জু দেবকে ঘাড়ে আঘাত করে অচেতন করেন। পরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। সারারাত ওই বাসায় থাকার পর শনিবার সকালে লিটন পালিয়ে রাঙামাটি চলে যান। বিকালে সেখান থেকে ফিরে রাউজানে নিজের বাড়িতে থাকেন এবং রাতে আবার ফটিকছড়ি উপজেলায় বোনের বাড়িতে চলে যান।

পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, খাবারে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে মঞ্জু দেবের ছেলে উত্তমকে অচেতন করা হয়। শনিবার বিকালে তার ঘুম ভাঙার পর সে তার মাকে খাটে শোয়া অবস্থায় দেখতে পায়। ডাকাডাকির পরও মা সাড়া না দেওয়ায় প্রতিবেশী সঞ্জু সেনকে ডেকে আনে। পরে প্রতিবেশীদের ফোন পেয়ে পুলিশ এসে মঞ্জু দেবের লাশ উদ্ধার করে এবং উত্তমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে বলে ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা জানান।

খুনের কারণ জানতে চাইলে ওসি বলেন, মঞ্জু দেব সুদের কারবার করতেন। মাস ছয়েক আগে মঞ্জু তার নিজের ছেলের (উত্তম দেব) কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়ে দিতে লিটনকে অনুরোধ করেন। বিনিময়ে প্রতিমাসে লিটনকে এক হাজার টাকা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এই লেনদেনের বিষয়টি উত্তমের কাছে গোপন রাখার অনুরোধ করেন। এরপর লিটন তার বাড়ির দলিলের কপি উত্তমের কাছে জমা রেখে থেকে টাকা ধার নিয়ে মাসি শাশুড়িকে দেন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ওই টাকা তার পরিশোধের কথা ছিল। এই টাকা ছাড়াও লিটন নিজের মায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে আরও ৯০ হাজার টাকা তুলে মঞ্জুকে ধার দিয়েছিলেন। উত্তমের কাছ থেকে নেওয়া ৫০ হাজার টাকা নির্ধারিত তারিখে শোধ করতে না পারায় তার সঙ্গে লিটনের ঝামেলা বাঁধে। বিষয়টি নিয়ে মঞ্জু দেবীর সঙ্গেও কয়েকদিন আগে লিটনের কথা কাটাকাটি হয়। আর এরই জের ধরে মঞ্জুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন লিটন।

চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন

Scroll to Top