নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহর বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত , বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পদত্যাগের দাবি উঠলেও নির্বিঘ্নে অফিস করে যাচ্ছেন তিনি। যদিও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে। ইতোমধ্যে তারা তদন্ত প্রতিবেদন সরকারের কাছে দাখিল করেছে বলে ওয়াসার শীর্ষ পর্যায় থেকে জানা গেছে।
গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের মহাপরিচালক মো. মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে তদন্ত দলটি চট্টগ্রাম ওয়াসায় আসেন। তারা বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি, পানি চুরি, প্রকল্পের মেয়াদোত্তীর্ণতা ও বিভিন্ন প্রকল্পের নথিপত্র পর্যালোচনাসহ চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে ওঠা সব অনিয়মের অনুসন্ধান করেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে চট্টগ্রাম ওয়াসার এক সিনিয়র প্রকৌশলী চাটগাঁ নিউজকে বলেন – বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি, পানি চুরি, প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীর গতি, নিজ মেয়ের নামে প্রতিষ্ঠা করা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়াসহ চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের সত্যতা খুঁজে পেয়েছে কমিটি। তারা সরকারের কাছে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন বলে জেনেছি। এখন সরকার তা পর্যালোচনা করে আগামী সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত দিতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় – পদত্যাগের চাপ, অনিয়ম-দুর্নীতির সম্ভাব্য শাস্তির খড়গ মাথায় নিয়েও দিব্যি অফিস করে যাচ্ছেন এ কে এম ফজলুল্লাহ । গতকালও তিনি অফিস করেছেন। তবে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি দুই দিনের ছুটিতে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা আসা মাত্র আমি সরে যাব, দেরি করব না। তবে আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে রাজি নই।
গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়ের পর দেশব্যাপী পট পরিবর্তন ও সংস্কারের লক্ষ্যে চট্টগ্রামেও ওয়াসার এমডি ফজলুল্লাহর পদত্যাগের দাবি উঠে। এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী সাধারণ নাগরিক সমাজ, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ (ক্যাব) বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলনে নামে। এই আন্দোলনের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে তদন্ত করার জন্য চিঠি পাঠানো হয়।
যুব ক্যাবের আহবায়ক হানিফ নোমান চাটগাঁ নিউজকে বলেন, আমরা অবিলম্বে দুর্নীতিবাজ ওয়াসার এমডি ফজলুল্লাহর পদত্যাগ চাই। তিনি চট্টগ্রাম ওয়াসাকে দুর্নীতির আখড়াতে পরিণত করেছেন। সেই আখড়া ভাঙ্গতে হলে এবং ওয়াসার ইমেজ রক্ষা করতে হলে অবিলম্বে তাকে অপসারণ করা জরুরি।
এদিকে, ১৫ সেপ্টেম্বর রোববার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ওয়াসার এমডির চুক্তিভিক্তিক নিয়োগ বাতিল, অনিয়মের তদন্ত এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবিতে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ,সমবায় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের কাছে স্মারকলিপিস দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের নেতারা। চারিদিকে পদত্যাগের হিড়িক ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় চট্টগ্রামবাসীর মনে ওয়াসার এমডি ফজলুল্লাহর পদত্যাগের বাস্তবতা দিনদিন ঘনীভূত হচ্ছে।
চাটগাঁ নিউজ/উজ্জ্বল/জেএইচ