পড়া হয়েছে: ২৩
চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরির পাশাপাশি পর্যটকদের খাওয়ানো হচ্ছে পঁচা-বাসি মাছ। ব্যবহার করা হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর তেল। যার কারণে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে রাস্তার পাশে এবং বালিয়াড়িতে বসানো সব ফিশ ফ্রাইয়ের দোকান বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন।
একই সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যা জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অভিযানে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশনের দায়ে ৪ টি ফিশ ফ্রাইয়ের ভ্রাম্যমাণ দোকানকে ২৩ হাজার টাকা জরিমানা ও সিলগালা করে।
কিন্তু জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অভিযানের ২৪ ঘন্টা না পেরুতেই বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা মানতেই ফের ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানীরা সামুদ্রিক কাঁচা নিয়ে মাছ রাস্তার পাশে এবং সৈকতের বালিয়াড়িতে বসে যান। যেখানে ভ্যানের ওপর সারি সারি সাজানো ছিল টুনা, স্যালমন, রুপচাঁদা, কোরাল, রেড স্নাইপার, সুরমা, স্কুড, কাকড়া, চিংড়ি, অক্টোপাসসহ নানা প্রজাপতির সামুদ্রিক মাছ। একই সঙ্গে এসব মাছ ভাজা করে ভ্যানের ওপর পরিবেশন করা হয়।
বুধবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা যায়, সুগন্ধা পয়েন্টের রাস্তার পাশে একের পর এক ভ্যান বসানো হয়েছে। ভ্যানের আশপাশে নোংরা পরিবেশ। এই পরিবেশের মাঝে রয়েছে অসংখ্য বসার টোল। যাতে পর্যটকরা বসে আছেন এবং তার পাশেই নোংরা পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে সামুদ্রিক মাছের বারবিকিউ এবং ফ্রাই। যা পর্যটকরা বসে খাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে অভিযানে যেসব ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানদার জরিমানা এবং দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল তারই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেচা-বিক্রি করছেন। এব্যাপারে ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানকার নুরু মিয়া বলেন, প্রশাসন তো বন্ধ রাখতে বলবেই। তা বলে কি বন্ধ রাখব।
একই সঙ্গে কথা হয় ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানি সাকিব, সুজন, সালমান, আহমদ, আনিছ ও আব্দু রহমান বলেন, পেটের দায়ে ব্যবসা করছি। প্রশাসন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে, এটা মানতে গেলে পেট চলবে না। তাই আদেশ অমান্য করে ব্যবসা করতে বসেছি।
একই সৈকতের বালিয়াড়িতেও একই অবস্থা। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সকল ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানীরা ব্যবসা করছেন।
এদিকে মঙ্গলবার অভিযানে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কক্সবাজার জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মো. নাজমুল ইসলাম জানান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে খাবার। এছাড়াও পঁচা-বাসি মাছ খাওয়ানো হচ্ছে পর্যটকদের। তেল সবচেয়ে বেশি অস্বাস্থ্যকর। সবগুলো ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাছগুলো তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হচ্ছে পঁচা তেলে মাছগুলো ভাজা হচ্ছে। খুবই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
এব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. মাসুদ রানা বলেন, মঙ্গলবার অভিযানে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশনের দায়ে ৪টি ভ্রাম্যমাণ দোকানকে ২৩ হাজার টাকা জরিমানা ও সিলগালা করা হয়েছিল। একইসাথে সবগুলো ফিশ ফ্রাই দোকান আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তা অমান্য করে ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানীরা ফের ভ্যান নিয়ে বসেছে তা জানা ছিল না। এখনই ব্যবস্থা নেয়া হবে, যারা নির্দেশ অমান্য করেছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে।