চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানাধীন আয়েশার মার গলির দুই ভবনের ফাঁকে থেকে শিশুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মূল আসামিসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- বরগুনা জেলার পাথারঘাটা থানার বড়টেংরা বাজার এলাকার মো. ফারুকের ছেলে মো. হাসান (১৫) ও তার মা হাফিজা বেগম (৩৬)। বর্তমানে তারা ইপিজেড থানাধীন বন্দরটিলা এলাকার হামিদ আলী টেন্ডলের রোড এলাকায় বসবাস করেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (বন্দর-পশ্চিম) উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আলী হোসেন। তিনি জানান, একটি মোবাইল নম্বর থেকে গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় কল করে জানানো হয় শিশু আবদুল্লাহকে অপহরণ করা হয়েছে। তাকে মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং পুলিশকে না জানানোর হুমকি দেয়। সেই মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে শুরু হয় অনুসন্ধাসন।
আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একজন কালো জ্যাকেট পরা ছেলে শিশু আবদুল্লাহর বাসায় ঢুকের ৩০ মিনিট পর দুজন একসাথে বের হয়। তারা দুজনই বাসা থেকে বের হয়ে বন্দরটিলা আলী শাহ মাজার গলি হয়ে ফুটপাত দিয়ে পায়ে হেঁটে বক্স আলী মুন্সী রোড অতিক্রম করে হামিদ আলী টেন্ডলের গলির দিকে যাচ্ছে। এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় হাফিজা বেগম নামে এক নারীর অবস্থায় নিশ্চিত করা হয়। এরপর বিকেলে হাফিজা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে আনোয়ারা থানাধীন পানির ট্যাঙ্কি এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত কিশোর মো. হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে হাসান জানায়, নিহত শিশু আবদুল্লাহর সাথে বন্দরটিলা এলাকায় একটি কোরআন একাডেমিতে একসাথে পড়াশোনা করার সময় বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তারা একসাথে খেলাধুলাও করতো। একসময় আবদুল্লাগ তার গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হলে আবদুল্লাহ চট্টগ্রামে পিতা-মাতার কাছে বেড়াতে আসে। এরমধ্যে বন্ধু হাসানের সাথে দেখা হয়। তারা বিগত চার পাঁচদিন একসাথে খেলাধুলাও করে। গতকাল সকালে হাসান আবদুল্লাহর বাসায় গিয়ে তাকে তার বাসায় ডেকে নিয়ে আসে। সেখোনে তারা একসাথে মোবাইল ফোনে ফ্রি-ফায়ার গেম খেলে। খেলাকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে হাসান তাকে মারধর করতে থাকলে এতে শিশু আবদুল্লাহর মৃত্যু হয়। এই হত্যাকে ভিন্ন দিকে মোড় ঘুরাতে চাঁদা দাবির নাটক সাজানো হয়। এরপর হাসানের মা সহ লাশ গুম করতে দুইটি ভবনের মাঝখানে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।