নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে ‘হামুন’। বর্তমান ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি ক্রমশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এ অবস্থায় পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, বন্দরে নিজস্ব সতর্কতা সংকেত ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করা হয়েছে। যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেটিতে সীমিত আকারে জাহাজ থেকে মালামাল খালাসের কার্যক্রম চলছে। যেসব ট্রাক বন্দর ইয়ার্ডে ঢুকে গেছে সেগুলোতে মালামাল দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পরবর্তী সময়ে জোয়ার এলে বড় জাহাজ বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং লাইটার জাহাজ কর্ণফুলী নদীর উপরিভাগ অর্থাৎ শাহ আমানত সেতু এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে আবহাওয়ার ১০ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় (১৯.৭০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.৭০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে 8৪৫ কিমি. পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিমি. পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২৫ কিমি. দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিমি. দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আগামীকাল (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর নাগাদ ভোলার কাছ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে অতিক্রম করতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিমি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিমি.। যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিমি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮১ মি.মি.) থেকে অতিভারী (৯ ৮৯ মি.মি.) বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতি ভারী (১৮৯ মিমি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমি ধ্বস হতে পারে।