সিপ্লাস ডেস্ক: ২০ অক্টোবর সন্দ্বীপের সাবেক সংসদ সদস্য দ্বীপবন্ধু মুস্তাফিজুর রহমানের ২২ তম মৃত্যুবার্ষিকী। মরহুমের আত্নার মাগফেরাত কামনায় প্রতি বছরের ন্যায় শুক্রবার সকাল ১০ টায় মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া মাহফিল করা হয় সাবেক সাংসদ এর নিজ বাসভবন সন্দ্বীপ বাউরিয়াতে।
পরিবারের আয়োজনে এ দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন দ্বীপবন্ধু মুস্তাফিজুর রহমানের বড় পুত্র সন্তান বর্তমান সন্দ্বীপের সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতা, ছোট ছেলে বর্তমান সন্দ্বীপ বাউরিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান মাইন উদ্দিন মিশন, সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন বেদন সন্দ্বীপ পৌরসভার মেয়র মোক্তাদের মাওলা সেলিম, মুস্তাফিজুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ জামিল ফরহাদ, সন্দ্বীপের বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান ও সন্দ্বীপ পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর সহ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন সহযোগি সংগঠনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এবং নেতা কর্মীগণ।
দোয়া মাহফিল শেষে সকলে মরহুম মুস্তাফিজুর রহমান এর করর জিয়ারত করেন এবং সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ,ছাত্রলীগ,স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে উনার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
দ্বীপবন্ধু মুস্তাফিজুর রহমান ৩১ ডিসেম্বর ১৯৪৩ সালে চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার বাউরিয়া ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৌলভি হাবিবুর রহমান ও মাতা বিবি আমেনার একমাত্র পুত্র সন্তান ছিলেন তিনি।
তিনি মুছাপুর বদিউজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, নাজিরহাট কলেজ থেকে আই কম, চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে বানিজ্যে স্নাতক ডিগ্রী পাশ করেন।
মুস্তাফিজুর রহমান ১৯৬৫ সালে চাকুরিতে যোগদান করেন তৎকালীন ইউনাইটেড ব্যাংকে (স্বাধীনতা পরবর্তীতে ইউনাইটেড ব্যাংক জনতা ব্যাংকে রুপান্তরিত হয়)। ১৯৮৩ সালে ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম তিনি। এছাড়া রুপালি লাইফ ইন্সুরেন্সের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান,কর্ণফুলি লাইফ ইন্সুরেন্সের পরিচালক ও উপদেষ্টা,ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্সের প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা সহ অসংখ্য বীমা ও কো-অপারেটিভ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন।
তিনি দৈনিক রুপালী, সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ, সাপ্তাহিক স্বদেশ খবর সহ কয়েকটি পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক ছিলেন। তিনি আবাহনী ক্লাবের সহ-সভাপতি, ধানমন্ডি ক্লাবের সহ-সভাপতি ও মেরিনার্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৫ পর্যস্ত সন্দ্বীপ সমিতি ঢাকা’র সভাপতি ছিলেন তিনি।
চট্টগ্রামের বিছিন্ন উপজেলা সন্দ্বীপ চট্টগ্রাম-৩ আসনে (১৯৯১-২০০১) পর্যন্ত ২ বার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। তার আমলে সন্দ্বীপে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সন্দ্বীপের প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় তিনি ছুটে গেছেন এবং সমস্যা সমাধান করেছেন। সন্দ্বীপে নিজ নামে একটি কলেজ, একটি উচ্চ বিদ্যালয় সহ, ৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা, এতিমখানা, মসজিদ মন্দির ও ঘূর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করেন।
২০০১ সালের ২০ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালে ৫৮ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তার মৃত্যুর ২২ বছর পরেও সন্দ্বীপের মানুষ উনাকে স্মরণ করে। সন্দ্বীপের মানুষের অন্তরে এবং সন্দ্বীপের ইতিহাসে উনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে।