নিজস্ব প্রতিবেদক: রোগের প্রতিকার, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সম্পর্কে একজন ডাক্তারের অভিজ্ঞতা অন্য সবার চেয়ে বেশি হবে এটিই স্বাভাবিক। তাই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ ও ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হচ্ছে জনসচেতনতা-এমনটা মনে করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। একমাত্র জনসচেতনতা বৃদ্ধিই ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় মনে করে এবার জনসচেতনতামূলক লিফলেট নিয়ে রাজপথে নেমেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ আয়োজিত ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক র্যালি ও লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিটি মেমন হাসপাতাল থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন অংশ প্রদক্ষিণ করে জিপিও’র সামনে এসে শেষ হয়। এসময় তিনি সড়কে চলাচলরত যানবাহনের যাত্রী সাধারণ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, পথচারীদের হাতে হাতে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন।
মেয়র বলেন, গতকাল একজন শিশু মারা গেছে। ৩-৪ দিন ধরে জ্বর নিয়ে ছিল শিশুটি। শিশুটির অভিভাবকরা অবহেলা করে হাসপাতালে যায়নি। পরবর্তীতে যখন খুব সিরিয়াস তখন শিশুটিকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। ২-৩ দিনের বেশি জ্বর থাকলে, কমপক্ষে একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত বলে আমি মনে করি। ডেঙ্গুর যে ভ্যারিয়েন্ট এখন, কসমোপলিটন যে ভ্যারিয়েন্ট আছে, সেটার কারণে এবার রোগী বেশি। ডেঙ্গু নিয়ে আমাদের সতর্কতা বজায় রাখতে হবে। আমাদের যে প্রচার সেটা চলতে থাকবে। যদি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারি ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারব।
এসময় মেয়র বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জনসাধারণকে সচেতন হতে হবে। ময়লা জমে থাকা বা পানি জমে থাকার বিষয়টি স্থানীয় ভাবে সমাধান করা জরুরি। আমাদের একার প্রচেষ্টায় মশা নিয়ন্ত্রণ যথেষ্ট নয়। স্থানীয় জনগণকে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে। এভাবেই আমরা ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া থেকে মুক্তি পেতে পারি। প্রতিটি ওয়ার্ডে মশক নিধন কার্যক্রম তদারকি করা হচ্ছে।
আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রাজনৈতিক নেতাকর্মী, মহল্লা কমিটি ও স্থানীয়দের বলেছি পরিচ্ছন্নতা সুপারভাইজার ও পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ঠিকমতো কাজ করছে কিনা, তা দেখবেন। নিজের শহর হিসেবে কিছু দায়িত্ব আপনারাও নেন। যেখানেই মনে করবেন ময়লা আবর্জনা আছে বা নালা-নর্দমা অপরিচ্ছন্ন আছে, সেখানে প্রতিটি ওয়ার্ডে সুপারভাইজারদের সরাসরি ফোন করবেন। যদি সাড়া না দেয়, সেই ব্যবস্থা আমরা করব।
ডা. শাহাদাত জানান, মশক নিধন কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে এবং প্রতি সপ্তাহে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ হিসেবে জয়েন্টে ব্যথা হয়, আর ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে শরীরের মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা এবং র্যাশ দেখা দিতে পারে। এ লক্ষণগুলোর ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। রোগ একবার হয়ে গেলে তো চিকিৎসা নিতে হয় এবং কেউ শক সিনড্রোমে চলে গেলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। কারো লক্ষণ থাকলে অবহেলা না করে ডেঙ্গু সেন্টারে আসতে পারে, আমাদের মেমন-২ হাসপাতালে। সেখানে আমরা ডেঙ্গুর এন্টিজেন টেস্ট করে দিই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, ডা. এসএম সরোয়ার আলম, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী (মারুফ) প্রমুখ।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি