ছাত্রলীগ ছাড়া বাতিল করতে হবে সব নিয়োগ

চবি রেজিস্ট্রারকে শাসালেন নেতারা

চাটগাঁ নিউজ ডেস্কঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার উপাচার্যের পদ ছাড়তে না ছাড়তেই চাকরির নিয়োগ নিয়ে বিরুপ অবস্থানে ছাত্রলীগ। সাবেক এই উপাচার্য কর্তৃক নিয়োগ দেওয়া এক ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের ভেতরে আটকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ১০/১৫ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।

বুধবার (২০ মার্চ) নতুন ভিসি প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের দায়িত্ব গ্রহণের পরই দুপুর দেড়টার দিকে তারা ওই নিয়োগকৃত ব্যক্তিকে মারধর করে রেজিস্ট্রার অফিসে আটকে রাখেন এবং রেজিস্ট্রারকে ছাত্রলীগ ছাড়া বাকি সকল নিয়োগ ক্যান্সেল করতে বলেন। এ সংশ্লিষ্ট একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভুক্তভোগী ইয়াহিয়া টিপু বলেন, আমার চাকুরি এপ্রুভ হয়েছে। আমি জয়েন করতে আসছিলাম রেজিস্ট্রার অফিসে। আমাকে জিজ্ঞেস করছে, আমি ছাত্রলীগ করি কিনা। না উত্তর দেয়ায় তখন তারা আমাকে মারধর করে। ছাত্রলীগ কর্মীদের বাইরে সকল নিয়োগ ক্যান্সেল করতে রেজিস্টারকে প্রথমে শাসাতে থাকেন শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের একাংশের নেতা ওয়াহিদুল ইসলাম। তিনি রেজিস্ট্রারের দিকে আঙুল উঁচিয়ে বলতে থাকেন, এখনো পিছনে বসে আছে ও। ও ছাত্রলীগ করে না। তবুও ওরে চাকুরি দিয়েছেন। ওর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ খাইছে ভিসি ম্যাম।

এরপর শাসাতে থাকেন একই গ্রুপের নেতা শাখা ছাত্রলীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোরশেদুল আলম রিফাত। তিনি রেজিস্ট্রারকে শাসিয়ে বলেন, ছাত্রলীগের বাইরের এগুলা ক্যান্সেল। ছাত্রলীগের বাইরে নিয়োগ ক্যান্সেল। ছাত্রলীগের পোলারে নিয়োগ দিলে সমস্যা নাই। ছাত্রলীগের বাইরে যেগুলা, ওইগুলা ক্যান্সেল। ছাত্রলীগের পোলাপাইনের চাকরি লওয়ার অধিকার আছে। বাইরের পোলাপাইনের কী অধিকার? ছাত্রলীগের বাইরে সব ক্যান্সেল।

তার সাথে সাথে এসময় উপস্থিত সকল ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও রেজিস্ট্রারকে শাসাতে থাকেন। আর ভিসিকে এসব নিয়োগের ব্যাপারে বলার জন্য তাদের পক্ষে রেজিস্ট্রারকে বুঝাতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. সুমন মামুন, সাধারণ সম্পাদক মো. মনসুর আলী। এসময় শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, একাকার গ্রুপের নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল, ভার্সিটি এক্সপ্রেসের (ভিএক্স) আল আমিন শান্ত, রায়হান ও আশিব তানিম। তখন রেজিস্ট্রার অফিসে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম মুরাদ, মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন, আব্দুল মান্নান ও শঙ্কর বড়ুয়া।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কেএম নূর আহমেদ বলেন, আমার অফিসে এসে তারা এরকম আচরণ করেছে। এটা আমার জন্য অপমানজনক। আমি তো তাদের নিয়োগ দিতে পারবো না। নিয়োগ দেবেন ভিসি। তবুও তারা আমার এখানে এসে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে, এটা মোটেও কাম্য নয়।

চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন

Scroll to Top