সিপ্লাস ডেস্ক: বাংলানিউজের জামালপুর প্রতিনিধি ও ৭১ টিভির সংবাদ সংগ্রাহক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার মূলহোতা বহিষ্কৃত সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুসহ চারজনকে আদালতে নেওয়া হয়েছে।
এসময় তাকে এক নজর দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় জমে ওঠে জামালপুর জেলা আদালত পাড়ায়।
যে ভিড়ের কারণে ছবি, ভিডিও ফুটেজ নিতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে গণমাধ্যম কর্মীদের।
রোববার (১৮ জুন) দুপুরে বকশীগঞ্জ থানা থেকে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে তাদের জামালপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। সেখানেই তাকে দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে জনতা।
এসময় দেখা গেছে, আসামিদের ছবি ও ভিডিও নেওয়ার জন্য গণমাধ্যম কর্মীরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেও, জনতার ভিড়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় তাদের পেশাগত কাজে। পাশাপাশি একত্র হয়ে যায় আদালত এলাকার চারপাশের মানুষ এবং আদালত ভবনের সুউচ্চ বারান্দাগুলো থেকেও বাবুকে আনার দৃশ্য দেখছিল জনসাধারণ।
সেখানে থাকা মিল্লাত রহমান নামে এক যুবক গণ মাধ্যমকে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান সাংবাদিককে মেরেছেন। সাংবাদিক সত্য লিখে তার কাছে জীবন দিতে হয়েছে। তার (নাদিম) সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে, এটা জন্তু-জানোয়ার ছাড়া আর কারো কাজ না। তাই চেয়ারম্যানের মুখোশধারী সেই জন্তুকে দেখতে এসেছি।
আলমগীর হোসেন নামে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন গণ মাধ্যমকে বলেন, একজন ইউপি চেয়ারম্যান যে সাংবাদিককে নৃশংসভাবে হত্যা করতে পারেন, তা দেখার জন্য জনতার এতোটাই ভিড় ছিল যে, আমাদের গণমাধ্যমকর্মীদের কাজ করতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। খুনি বাবুকে নেওয়ার পথে মানুষ চারপাশ থেকে এমনভাবে ঘিরে রেখেছিল যে, আমরা ঠিকমতো তার ছবিই ধারণ করতে পারিনি।
এর আগে এদিন (১৮ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের একটি দল সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু, মনির, রেজাউল ও জাকিরকে বকশীগঞ্জ থানা থেকে জামালপুর জেলা আদালতে উপস্থাপনের জন্য নিয়ে যায়।
এসময় থানা চত্বরে ইউপি চেয়ারম্যান বাবুসহ খুনিদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন নিহত সাংবাদিক নাদিমের পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা।
এর আগে এদিন ভোরে বাবুসহ ৪ আসামিকে বকশীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে র্যাবের একটি দল।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুন রাতে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অস্ত্রধারী ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত সাংবাদিক নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন বিকেল পৌনে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।