রাউজান প্রতিনিধি : প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পর আন্দোলন স্থগিত করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ও হলত্যাগের নির্দেশনা পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে চুয়েট প্রশাসন। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থীর প্রাণহানির জের ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত আন্দোলনকারী ২০ শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করেন। শিক্ষার্থীরা জানান, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাসচালককে গ্রেফতারের দাবি পূরণ হয়েছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তহবিল গঠন করবে, যেখানে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী, সব শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সহযোগিতা করবেন।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক প্রশস্ত করার কাজ দ্রুত শুরু হবে। এ বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করা হবে বলে আশ্বাস পেয়েছেন তারা। এসব দাবি পূরণ কিংবা আশ্বাসের ভিত্তিতে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে চুয়েট রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে চুয়েটকে অনির্দিষ্টকালের চুয়েট ঘোষণা করেন। বিকাল ৫টার মধ্যে ছাত্রদের এবং ২৬ এপ্রিল সকাল ১০টার ছাত্রী হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরপর শিক্ষার্থীরা সকল একাডেমিক ভবন ও এডমিনিস্ট্রেশন ভবনে তালা দিয়ে ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।বিকাল পাঁচটার দিকে চুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক ড. কাজী দেলোয়ার হোসেন দোলন, সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মাসরুর আহমেদসহ কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রাশেদ পারভেজ বলেন, ‘আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত জানানোর পর আগামীকাল (শুক্রবার) সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে। এতে হল ভ্যাকেন্ট (হলত্যাগের নির্দেশ) ও একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের আপাতত আবাসিক হলে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’
গত সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের জিয়ানগর এলাকায় চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাস মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। মোটরসাইকেলের আরোহী ছিলেন তিন চুয়েট শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে দুর্ঘটনাস্থলেই শান্ত সাহা (২০) ও তৌফিক হোসেন (২১) নামে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। শান্ত চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ২০ ব্যাচের ও তৌফিক ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী। একই ঘটনায় জাকারিয়া হিমু আরেকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) ঘাতক বাসের চালককে পুলিশ গ্রেফতার করে। ঘটনার পর সোমবার বিকেল থেকেই শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ