চমেকের পরামর্শ ছিল, তবুও ঢাকায় পাঠানো হয়নি অসুস্থ মোশাররফকে

নিজস্ব প্রতিবেদক : নিয়মিত চেকআপের জন্য কারাবন্দি সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ তাকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ তাকে ঢাকায় পাঠানোর ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্তে আসেনি। এমন অবস্থায় অসুস্থ বন্দি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের জীবনে কি ঘটতে যাচ্ছে- তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা।

কারাসূত্র জানিয়েছে, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দিলে প্রথমে তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বুধবার ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে সকালে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসে কারা কর্তৃপক্ষ। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বয়স বর্তমানে ৮২ বছর। আওয়ামী লীগের এই নেতা ডিমেনশিয়া, হার্টের সমস্যা, থাইরয়েড, নিউরোলজিক্যাল সমস্যা, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনসহ নানা রোগে ভুগছেন।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন খান চাটগাঁ নিউজকে বলেন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য আমাদের হাসপাতালে আনা হয়েছিল। ডাক্তাররা তার পরীক্ষা করেছেন। তার ডায়াবেটিস, হাই প্রেশার, অ্যাজমাজনিত হার্ট ডিজিজ, হাইপো থাইরয়েডিজম, স্মৃতিবিভ্রমতা, পার্কিনসন ডিজিজসহ নানা রোগের আরো কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা লাগবে। তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে নেওয়ার পর সেখান থেকে তাকে পিজি হাসপাতালে নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, তিনি (মোশাররফ) বয়সের কারণে অনেক রোগে আক্রান্ত। তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে মেডিসিন, নিউরো ও হৃদরোগ বিভাগের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুপুরের দিকে তাঁকে বিএসএমএমইউয়ে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

তবে চমেকের পক্ষ থেকে পরামর্শ থাকলেও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে ঢাকায় পাঠানোর ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্তে আসেনি চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। চমেক থেকে রিলিজ দেয়া হলেও তাকে ফের চট্টগ্রাম কারাগারেই নিয়ে আসা হয়েছে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ইকবাল হোসেন চাটগাঁ নিউজকে বলেন, বার্ধক্যের কারণে তিনি অসুস্থতাবোধ করেছিলেন। আমাদের চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। তবুও অধিকতর চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়। তবে ঢাকায় নেয়ার ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। ঢাকায় নেয়ার ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গত বছরের ২৭ অক্টোবর ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে পল্টন থানার একটি হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে এমপি হন। ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণেতাদের মধ্যে তিনি একজন।

চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/এসএ

Scroll to Top