চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম বন্দরে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ। এ জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও এডি পোর্টস গ্রুপের মধ্যে সমঝোতা স্মারক হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর উপস্থিতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এবং আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সাইফ আল মাজরুই স্মারকে সই করেন।
এর আগে গত বছর এ বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠান এডি পোর্টস গ্রুপ।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল প্রকল্পে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে এই বিনিয়োগ করবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠানটি। বে টার্মিনালে চারটি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বন্দরের। এর মধ্যে দেড় হাজার মিটার লম্বা মাল্টিপারপাস টার্মিনাল (জাহাজ থেকে কনটেইনার ও পণ্য ওঠানো-নামানোর স্থাপনা) বন্দর কর্তৃপক্ষ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ বিনিয়োগের প্রস্তাব দেওয়ার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে।
চুক্তি অনুযায়ী সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ বে-টার্মিনাল প্রকল্পের অধীনে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে বিনিয়োগ করবে। তারা অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি যন্ত্রপাতিও সরবরাহ করবে। মাল্টিপারপাস টার্মিনালটি চট্টগ্রাম বন্দর ও আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ যৌথভাবে নির্মাণ করবে। ১ হাজার ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে সিঙ্গাপুরের পিএসএ এবং অন্যটি নির্মাণে দুবাইয়ের ডিপি ওয়ার্ল্ড অর্থায়ন করার সম্ভাবনা রয়েছে। ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ব্রেক ওয়াটার ও অ্যাক্সেস চ্যানেল ড্রেজিং করবে বিশ্বব্যাংক।
অনুষ্ঠানে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বে-টার্মিনাল নির্মিত হলে ২৪ ঘণ্টা জাহাজ আসা-যাওয়া করবে। জোয়ারভাটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। চট্টগ্রাম বন্দর অন্য ধরনের উচ্চতায় চলে যাবে। বে-টার্মিনালের সঙ্গে সড়ক, রেলওয়ে কানেকটিভিটি থাকবে। পণ্য পরিবহন সহজলভ্য হবে। বে-টার্মিনাল বাংলাদেশের সমুদ্র পরিবহনের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
সমঝোতা স্মারকের বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে তথা বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য বিদেশি বিনিয়োগ আসবে এবং দেশীয় অর্থের সাশ্রয় হবে। এডি পোর্টস গ্রুপের সঙ্গে অংশীদারত্বে কাজ করার ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন হবে এবং কর্মসংস্থান বাড়বে।
সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে এখন দেশের তিনটি বন্দর ব্যবহৃত হচ্ছে। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা—এই তিন বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন হয় প্রায় ৮৭ শতাংশ। সরকার এখন এই বন্দর ঘিরে নতুন তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি প্রকল্প ‘পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল’ নির্মাণ শেষে এখন চালুর অপেক্ষায় আছে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। শুধু পিছিয়ে আছে বে টার্মিনাল প্রকল্প।
জানতে চাইলে আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের স্থানীয় অংশীদার সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন বলেন, আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের বিনিয়োগের মাধ্যমে বন্দরে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। আবুধাবি ফেডারেল সরকারের এই প্রতিষ্ঠান লজিস্টিক খাতে এক ছাদের নিচে সব ধরনের সেবা প্রদান নিয়ে কাজ করে।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ