চট্টগ্রাম থেকে অপহৃত শিশু উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: নগরীর বাকলিয়া থেকে অপহৃত শিশু কন্যাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় অপহরণ চক্রের মূলহোতাসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানাধীন এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার দুলাল মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার দুধ মিয়ার ছেলে।

র‌্যাব জানায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ফাতেমা আক্তার নামে এক মহিলা তার ৫ বছর বয়সী কন্যা ও ১৫ মাস বয়সী শিশু পুত্র রাব্বীকে নিয়ে নেত্রকোনা যাওয়ার জন্য চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে আসেন। স্টেশনে দুলাল নামে এক ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় ঘটে। পরিচয়ের সুবাদে ফাতেমা আক্তার দুলাল মিয়াকে নেত্রকোনা ট্রেনের সময় জানতে চাইলে দুলাল মিয়া নেত্রকোণাগামী কোন ট্রেন নেই বলে জানান। ফাতেমা আক্তার তার বাড়ি বোয়ালখালীর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন দুলাল মিয়াকে। দুলাল মিয়া ফাতেমা আক্তার এবং তার সন্তানদের নিয়ে নগরীর কোতোয়ালী থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে তাকে কৌশলে বাকলিয়া থানাধীন বাসুর কলোনিতে নিয়ে যায়। যেহেতু সেদিনের ট্রেন নেই তাই তাকে পরের দিন ট্রেন ধরিয়ে দেবে বলে থাকার ব্যবস্থা করে দেয় দুলাল মিয়া। ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালের নাস্তা খেয়ে বাথরুমে গেলে দুলাল মিয়া তার ১৫ মাস বয়সী ছেলে রাব্বিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ফাতেমা আক্তারের স্বামী বাদী হয়ে বাকলিয়া থানায় দুলাল মিয়াকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

র‌্যাব আরও জানায়, মামলার আসামি দুলাল মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার সদর থানা এলাকায় অবস্থান করছে; এমন তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় র‌্যাব-১৪ ময়মনসিংহসহ যৌথ অভিযান চালিয়ে দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে দুলাল মিয়া জানান, অপহৃত শিশুটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক প্রবাসী দম্পতির কাছে ১ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। পরে দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানাধীন এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এসময় ওই প্রবাসী মোরশেদ মিয়াকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর মোরশেদ মিয়া জানায়, সে ১৭ বছর দেশের বাইরে ছিল। তার ৫টি কন্য সন্তান রয়েছে। মূলত পুত্র সন্তানের আকাঙক্ষায় সে এই অপহরণ চক্রের সাথে যোগাসাজশে প্ররোচণা দিয়ে শিশু বাচ্চাটিকে তার কাছে নিয়ে যায়।

র‌্যাব আরও জানায়, দুলাল মিয়ার মোবাইলে বাচ্চা বিক্রি সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কথোপকথনের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। দুলাল মিয়া এবং তার পরিবার এক ভয়ঙ্কর সক্রিয় অপহরণ চক্র বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের দ্রুত ধরার বিষয়ে র‍্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

গ্রেপ্তার দুলালের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানায় চুরি সংক্রান্ত একটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও দুলাল মিয়া আড়াই বছর বয়সী শিশু সারা মনিকে অপহরণের মামলায় অভিযুক্ত এক নম্বর আসামি। ওই মামলায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে তার স্ত্রী রুনা বেগম বর্তমানে কিশোরগঞ্জ ভৈরব থানা কারাগারে রয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন

Scroll to Top