চট্টগ্রামে তৈরি পোশাক খাতে ক্ষতি ২২০০ কোটি টাকা

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রভাব

নিজস্ব প্রতিবেদক : কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার জেরে প্রায় এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর পুরোদমে চালু হয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সব শিল্প-কারখানা। এ সময়ে ৬০০ পোশাক কারখানায় ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২২০০ কোটি টাকা। এ ক্ষতি পুষিয়ে আনতে অতিরিক্ত সময়েও কাজ করছেন কারখানা সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রামের কয়েকটি কারখানায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলমান কারফিউর মধ্যেও সরকারি নির্দেশনা মেনে নিটিং, ডায়িং, স্পিনিং, গার্মেন্টসের কারখানার কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে। কারখানাগুলোর কর্মচাঞ্চল্য এতো বেড়েছে যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। কিছু কিছু কারখানায় শিফট ভাগ করে কাজ চলছে। শ্রমিকদের কাজ করতে হচ্ছে অতিরিক্ত সময়েও। তবে কাজের চাপ নিয়ে অসন্তোষ নেই এ খাত সম্পৃক্তদের।

আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় বন্ধ ছিল সরকারি বেসরকারি অফিসসহ বেশিরভাগ শিল্প কারখানা। সেই সাথে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে বাণিজ্যের জন্য বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল বাংলাদেশ, বন্দরের পণ্য উঠানামা ছিল বন্ধ। গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের মতে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বিদেশি ক্রেতাদের কাছে নেতিবাচক বার্তা গেছে, দীর্ঘমেয়াদে এর ক্ষতি হবে আরও বেশি।

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম চট্টগ্রামের সভাপতি আবু তৈয়ব চাটগাঁ নিউজকে বলেন, ‘আমাদের বায়ারদের কাছে একটি ভুল বার্তা গেছে। এভাবে ৬-৭ দিন বিশ্ব থেকে আমাদের দেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায়। যা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অনেক বেশি ক্ষতি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রযুক্তির এ যুগে আলাদা আলাদা করে ইন্টারনেট সরবরাহের ব্যবস্থা করা উচিত। বিশেষ মুহূর্তে ইন্টারনেট বন্ধ রাখলেও গুরুত্বপূর্ণ খাতসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যেন ইন্টারনেট নিরবিচ্ছিন্ন থাকে।’

বিকেএমইএর পরিচালক ফৌজুল ইমরান খাঁন চাটগাঁ নিউজকে বলেন, ‘সহিংসতার জেরে পোশাক কারখানা প্রায় এক সপ্তাহ বন্ধ থাকায় সারাদেশে দৈনিক ১৬০০ কোটি টাকা করে মোট প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রামে দৈনিক ৩২০ কোটি টাকা করে ২২০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। আমাদের ব্যবসা যেভাবে আমরা তিলে তিলে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে নিচ্ছিলাম এর মাঝে হঠাৎ করে ধাক্কা লেগেছে। ভবিষ্যতে যার প্রভাব খুবই বেশি বলে মনে হচ্ছে।’

চৌধুরী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিক চৌধুরী বলেন, ‘গার্মেন্টস সেক্টর হচ্ছে একটি ক্রিটিকাল সেক্টর। এখানে যত বেশি সাপোর্ট দেওয়া হবে আমরা ততো বেশি উন্নত করতে পারবো। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান তাৎক্ষণিক অনুভব না হলেও তবে এর প্রভাব সামনে আসবে। আমরা যদি বায়ারদের ভালোভাবে সাপোর্ট দিতে না পারি তাহলে আমদের ভবিৎষ্যতে আরও খারাপ সময় আসবে। এখনো সুযোগ আছে আমাদের সবকিছু গুছিয়ে নেওয়া উচিত। তবে সে চেষ্টা আমরা দেখছি না।’

চাটগাঁ নিউজ/এআইকে/এসআইএস/এসএ

Scroll to Top