প্রতীক্ষার অবসান; স্বাভাবিক হচ্ছে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: কারিগরি ত্রুটির কারণে চট্টগ্রামে বন্ধ হয়ে যাওয়া গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে কক্সবাজারের মহেশখালীর ভাসমান টার্মিনাল থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) পাইপলাইনে সরবরাহ শুরু হয়।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ১০টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ঘনফুট করে সরবরাহ করা হয়েছে। দুপুরের পর চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে।

গ্যাস সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবু সাকলায়েন বলেন, ‘চট্টগ্রামের গ্রাহকরা গ্যাস পেতে শুরু করেছেন। দুপুর থেকে স্বাভাবিক চাপে গ্যাস সরবরাহ শুরু হতে পারে।’

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইন্স) মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘এলএনজি থেকে রূপান্তরিত গ্যাস পাইপলাইনে সরবরাহ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে চাপ বাড়ছে, সরবরাহও বাড়তে শুরু করেছে।’

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) হালিশহর কার্যালয়ের জরুরি গ্যাস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, ‘আজ শনিবার ভোররাত চারটার দিকে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। বর্তমানে গ্যাসের চাপ কম থাকলেও ধীরে ধীরে তা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। একটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির। অন্যটি সামিট গ্রুপের এলএনজি টার্মিনাল। দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে দিনে সর্বোচ্চ ৮৫ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হয়। ৫ বছর পর পর এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়। গত ১ নভেম্বর মার্কিন এক্সিলারেট এনার্জি টার্মিনালটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গভীর সমুদ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজারের মহেশখালীতে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে পাওয়া গ্যাস চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকায় সরবরাহ করা হয়। একটি এলএনজি টার্মিনালে যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিলে শুক্রবার ভোর থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। মেরামত শেষে টার্মিনালটি চালু করতে গেলে এতে পুনরায় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এতে চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তবে কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সমস্যা দেখা দেওয়ার পর পরই টার্মিনালটির মেরামতের কাজ শুরু হয়। পরে টার্মিনালটি থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়।

পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষে গত বৃহস্পতিবার রাতে মার্কিন এক্সিলারেট টার্মিনালটি চালুর চেষ্টা করা হয়। একাধিকবার চালু করলেও গ্যাস সরবরাহ করা যায়নি। আবার বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যদিকে সামিট এলএনজি টার্মিনালটিও গত বৃহস্পতিবার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যাওয়ার কথা ছিল। এ কারণে টার্মিনালটি বন্ধ করা হয়। তাই গ্যাস সরবরাহও বন্ধ ছিল। গতকাল রাত পর্যন্ত এক্সিলারেটের টার্মিনাল চালু করতে না পারায় বিপর্যয় ঘটে।

উল্লেখ্য, দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। দুই মাস ধরে দিনে সরবরাহ করা হচ্ছিল ২৫০ কোটি ঘনফুটের কম। এর মধ্যে এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ হওয়ায় সরবরাহ ২০০ কোটি ঘনফুটে নেমে আসে।

 

চাটগাঁ নিউজ/এমএসআই

Scroll to Top