চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে চট্টগ্রাম নগরে হওয়া ২৩ মামলার মধ্যে ১৫টিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। এতে ৬০৭ আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আসামিদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী ও বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মী। এসব মামলা পুলিশের ওপর হামলা, বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) মামলার আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন উল্লেখ করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদনগুলো জমা দেয় পুলিশ। মামলার ধার্য দিনে প্রতিবেদনগুলো গ্রহণের ওপর শুনানি হবে। আদালত পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করলে মামলাগুলো আর চলবে না।
রোববার (১৮ আগস্ট) নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে চট্টগ্রাম নগরে হওয়া ২১ মামলায় আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১৫টির প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে। কেবল শিক্ষার্থী খুনের দুটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়নি।
পুলিশ সূত্র জানায়, চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া ১৫টির মধ্যে পুলিশের ওপর হামলা, বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে কোতোয়ালী থানায় ৫টি, পাঁচলাইশ থানায় ৪টি, বাকলিয়া থানায় ১টি, আকবর শাহ থানায় ১টি, চান্দগাঁও থানায় ২টি এবং খুলশী থানায় ২টি মামলা করা হয়।
কোটা সংস্কারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি ঘিরে গত ১৭ ও ১৮ জুলাই নগরের মুরাদপুর ও বহদ্দারহাটে ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ আটজন নিহত হন। এসব ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২৩টি মামলা করে। গ্রেপ্তার করা হয় শিক্ষার্থী, বিএনপি-জামায়াতের কর্মীসহ অন্তত ৮০০ জনকে। ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিলে গ্রেপ্তার আসামিরা কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন। শুরু থেকেই পুলিশের করা এসব মামলা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে।
জামিনে মুক্তি পেলেও এখনো ট্রমা (মানসিক আঘাত) কাটিয়ে উঠতে পারেননি বলে জানান ছাত্র আন্দোলনে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলার আসামি চট্টগ্রামের হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষার্থী আবদুল্লাহ বিন আইয়ুব। তিনি বলেন, ‘মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে গেলে অন্তত আদালতে হাজিরা থেকে বাঁচব।’
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, পুলিশের করা খুনের মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। প্রকৃত আসামিদের শনাক্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। আর নিহত কারও পরিবার মামলা করলে পুলিশ মামলা নেবে।
এদিকে চান্দগাঁও থানায় আন্দোলনে গুলিতে শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের করা মামলাটি তদন্তাধীন থাকলেও গত শনিবার নিহত শিক্ষার্থী তানভীর সিদ্দিকীর চাচা মোহাম্মদ পারভেজ বাদী হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, নগরের ৩ কাউন্সিলরসহ প্রায় ৮০ জনকে আসামি করা হয়।
চাটগাঁ নিউজ/এআইকে