সরোজ আহমেদ : বৈরি আবহাওয়া ঈদের বাঁধভাঙ্গা আনন্দকে একটুকু ম্লান করতে পারেনি। ঈদের দিন থেকে বিনোদনপিয়াসী মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে ভিড় জমিয়েছেন বন্দরনগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে।
ঈদের দিন সোমবার বিকেল থেকে বন্দরনগরী ও জেলার প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্র বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষের পদচারণায় সরগরম হয়ে ওঠে। ঈদ উৎসবে শিশু-কিশোরদের পাশাপাশি বড়রাও মেতে ওঠে আনন্দ উল্লাসে। ঈদ বিনোদনের এ রেশ কাটতে আরো কয়েক দিন সময় লাগবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (১৯ জুন) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর বিনোদন স্পট চিড়িয়াখানা, ফয়’স লেক কনকর্ড অ্যামিউিজমেন্ট ওয়ার্ল্ড, সী ওয়ার্ল্ড, স্বাধীনতা পার্ক, পতেঙ্গা সী বিচ, পতেঙ্গা বাটারফ্লাই পার্ক ও আগ্রাবাদ কর্ণফুলী শিশু পার্কে ছিল বিনোদন প্রিয় মানুষ ও পর্যটকদের বাঁধভাঙ্গা ঢল। কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। সবখানে বইছে খুশির জোয়ার।
আমাদের উপজেলা সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বাঁশখালী বামের ছড়া ইকোপার্ক, আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকত, সীতাকুন্ড ইকোপার্ক, মিরসরাই মহামায়া প্রকল্প এবং কাপ্তাই এলাকায় বিনোদন পিয়াসী মানুষের কমতি নেই। এসব স্থানে নারী-পুরুষ বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের সমুদ্র সৈকতের বালুচরে হাঁটাহাঁটি, ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালী, ফুচকা-চটপটিসহ বিভিন্ন খাবার খেয়ে সময় কাটাতে দেখা গেছে। আড্ডা, গান, সেলফিতে মুখর দেখা গেছে তরুণ-তরুণীদের।
ফয়’স লেক কনকর্ড অ্যামিউিজমেন্ট ওয়ার্ল্ডের জনসংযোগ কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ জানান, নগরীর অন্যতম বিনোদন স্পর্ট ফয়’স অ্যামিউজমেন্ট ওয়ার্ল্ড ও সী ওয়ার্ল্ড ঈদে দর্শনার্থীদের কথা চিন্তা করে নানা ঈদ বিনোদনের আয়োজন করেছে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ জানান, বর্তমানে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় অনেক পশু-পাখির সমাগম ঘটেছে। লোকজন পরিবার-পরিজন নিয়ে দিনের দিন বিকেল থেকে ঈদ আনন্দকে প্রাণবন্ত করতে চিড়িয়াখানায় আসছেন। আগত দর্শণার্থীরা বিলুপ্ত প্রায় সকল পশু-পাখি দেখে নির্মল আনন্দ পাচ্ছেন। বিশেষ করে চিড়িয়াখানার বাঘ-বাঘিনী, সিংহ-সিংহী, হরিণ, ভাল্লুক, জিরাপ ও বানরের খাঁচার সামনে দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি।
তিনি আরও জানান, ঈদের দিন বিকালে দর্শণার্থীদের মোটামুটি ভিড় ছিল। পরদিন প্রায় ১১ হাজার দর্শনার্থী হয়েছে। আজ (বুধবার) তা আরও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ফ্যামেলি নিয়ে বেড়াতে আসা খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী শাহ জামাল জানান, ব্যবসায়ী মানুষ সারাবছর ব্যস্ত থাকি। ঈদের সময় যে কটা দিন অবসর পাওয়া যায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা করি। তাছাড়া ঈদে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেড়ানোর আনন্দটা অন্যরকম।
পতেঙ্গা সী-বিচে বেড়াতে আসা দশনার্থী চাকুরীজীবী রিদওয়ানুল হক জানান, মুসলমানদের দুটি বড় ধর্মীয় উৎসব রমজানের ঈদ এবং কোরবানির ঈদ। ঈদ উপলক্ষে ছুটির দিনগুলোতে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়াতে বেশ ভাল লাগে। তাছাড়া ঈদে বেড়ানো নিয়ে ছেলে-মেয়েদেরও আবদার থাকে। তাই প্রতিবছর ঈদে পরিবার নিয়ে নগরীর কাছাকাছি বিনোদন স্পটগুলো ঘুরে বেড়ানোর চেষ্টা করি।
ঈদের ছুটিতে বেশির ভাগ মানুষ গ্রামের বাড়িতে ছুটে যাওয়ার কারণে গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকাল থেকে ব্যস্ত নগরী পরিণত হয় ফাঁকা নগরীতে। ফলে কোথাও ছিল না যানজটের বালাই। রবিবার বিকেল থেকে ভ্রমন পিয়াসী মানুষের ঢল নামে প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রে। অনেকে যনজটবিহীন পুরো নগরী ঘুরে বেড়িয়েছেন মোটরসাইকেল, রিকশায় চড়ে কিংবা পায়ে হেঁটে।
এছাড়া নগরীর দশর্নীয় স্থান ওয়ার সিমেট্রি, কর্ণফুলী সেতু, সিআরবি পাহাড়, ডিসি হিলেও ছিল বিনোদন পিয়াসীদের উপচে পড়া ঢল।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ